ছবি তোলার মুহূর্তে রণজয় সোহিনীকে খানিক টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।
পিঠের গায়ে বৃষ্টির ফোঁটা। রণজয়ের চোখ আর সরছে না সোহিনীর আধভেজা চুলে নুইয়ে পরা বেল ফুলের মালা থেকে। আনন্দবাজার অনলাইনের চিত্রগ্রাহককে সরিয়ে তিনি নিজেই একের পর এক সোহিনীর লাল পেড়ে সাদা গরদের পুজো সাজকে বন্দি করে রাখছেন তাঁর মুঠোফোনে।“ শর্বরীদি লাল পেড়ে ভারি কাজের গরদের সঙ্গে ব্লাউজের কথা ভাবতে পারতেন না। এই শাড়ির আভিজাত্যই শেষ কথা”, অভিনেত্রী সোহিনী সরকারকে সাজাতে সাজাতে বললেন রেশমি বাগচী। শাড়ির পাড়ের জমকালো বুননের পাশাপাশি হাতের সূক্ষ্ম কাজের পাড়ে যেন অঞ্জলির ইশারা।
বালিপঞ্জের অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর বাড়ির চাতালে তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো প্রেমিক হাওয়া। সোহিনী বলে উঠলেন, “রণজয় সাজতে যা সময় নেয় না! আমি যেমন জিনস আর টি শার্টে এক মিনিটেই তৈরি হতে পারি। ও চুল নিয়েই আধ ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে। ব্যাগে আবার চুল সাজানোর নানা উপকরণ নিয়ে ঘোরে। একেবারে কার্তিক ঠাকুর”। বৃষ্টি রণজয়ের চুল ছুঁয়ে সোহিনীর গায়ে গিয়ে পড়ে। ছবি তোলার মুহূর্তে রণজয় সোহিনীকে খানিক টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়। খুব কাছে। কলকাতার সংস্কৃতিকে মনে রেখে হাতের কাজে নকশা করা লাল পাঞ্জাবি আর ধুতিতে সোহিনীর মন জিতে নিলেন তিনি।
রণজয় সাজতেই এত সময় নেন। বিয়ে হলে কী করবেন?
সোহিনী: ও তো বিয়ে করবে না।
রণজয়: আরে দুম করে করব…
সোহিনী: আরে দুম করে বিয়ে হয়? কেমন সাজব? কাকে বলব সাজাতে? ‘শূন্য’-কে শাড়ি বানাতে হবে। সময় চাই আমার। এ ভাবে বিয়ে হয় নাকি।
রণজয়: হয়। পাঁচ দিনে হবে। বুঝলি! সব ঠিক করে বিয়ে তো সবাই করে। আমি ও ভাবে করব না।
একই নেশা লেগেছে এই দুই প্রেমিকের। থেকে থেকেই ‘শূন্য’-র সাজে গাঢ় হয়ে উঠছে তাঁদের মুখ। একে অপরকে খোঁচা দিয়ে কথা বলতে মজা পান তাঁরা। ওখানেই যত প্রেম। সোহিনী যখন সাজ ঘরে রণজয় আনমনে বললেন,‘‘প্রত্যেক মানুষের জীবনে শূন্য জায়গা থাকে। আমার সেই শূন্য জায়গা সোহিনী ভরিয়েছে। ওর ওপরে নির্ভরশীল আমি। আমার অনেক গোপন কথা সঙ্গে ভাগ করতে পারি যা আগে কারও সঙ্গে করিনি।’’
সাজ বদলের পালা এ বার কাঁথার জমাটি কাজে কালো রঙে। রেশমী নাকে গয়না পরালেন সোহিনীকে। চুলকে ঝুটি বেঁধে রণজয় সেই এক গয়নায় সাজলেন। কে বলে ছেলেরা নাকে গয়না পরে না? উচ্ছ্বসিত রণজয় বললেন, “এই প্রথম এমন গয়না পরলাম।“ কালো চশমায় রণজয় থমকে গেলেন সোহিনীকে দেখে। হাত কাটা এক রঙের কুর্তি সোহিনীকে দেখে বললেন রণজয় “একটু কাছে আয়। আমাকে দেখ…”। সোহিনী লাজুক।
রণজয় একটু ফিরে যান। বলতে থাকেন, “দার্জিলিংয়ে ছিল ‘জাজমেন্ট ডে’র কাজ। কফিশপ থেকে বেরিয়েই প্রেম পেল খুব। হাতের কাছে বিচুটি পাতা। তাই দিয়েই হাঁটু গেড়ে বসে রণজয় তখন শাহরুখ। তাঁর কথায়, “সোহিনী বলল, ও শাহরুখ আর আমি নাকি কাজল।” সেখান থেকেই প্রেমের শুরু। যা দু’বছর পরেও চলছে একই ভাবে। ‘বিচুটি প্রেমের প্রস্তাব’। আর তার কিছু দিন পর থেকেই একসঙ্গে সংসার। কে বলেছে ভালবাসতে গেলে বিয়েই করতে হয়?
কাছ থেকে একটু দূরে গেলেন তাঁরা। সোহিনী কাঁথার কাজে জাম রঙা লম্বা ঝুলের জামায় একা হলেন বৃষ্টির কাছে। অন্য দিকে রণজয় বুক খোলা নীল কুর্তায় আলতো করে ছুঁয়ে দিলেন সোহিনীর হাত।
শুধু মাত্র আনন্দবাজার অনলাইনের পুজো সাজে শাড়ি আর পাঞ্জাবির প্রকাশ্যে মিলন হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy