Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Durga Puja 2020

অবাক কাণ্ড, এই দুর্দিনেও পুজোর সব জোগাড় হয়ে গেল ঠিক ঠিক!

বাড়ি জুড়ে ঢাকের আওয়াজ, ফুলের গন্ধ আর হাসি মাখা মুখ... মা আসছেন।

সুদীপা চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ১২:৪৬
Share: Save:

এই মাসখানেক আগেও পুজো আদৌ সব নিয়ম মেনে হবে কিনা, তা নিয়েই আশঙ্কা বাড়ছিল ক্রমশ। পুজো তো হচ্ছেই, তবে এ বার আরও ধুমধাম করে। যা যা বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তা-ও হঠাৎ করেই যেন কেমন দুই দুইয়ে চার হয়ে গেল। কী বলি বলুন তো একে? দৈবযোগ?

আমি সুদীপা। চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর কথা তো অনেকেরই জানা। বিয়ে হয়ে আসা ইস্তক এই বাড়ির পুজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী জড়িয়ে গিয়েছি নিজেরই অজান্তে। এই বাড়িতে মা নেহাতই প্রতিমা নন, বাড়ির মেয়ে। তিনি আসেন, বাড়ির লোকেরা আনন্দে মেতে ওঠে, হইহই করে...ঠিক যেমন মেয়ে বহু দিন পরে বাড়ি ফিরলে পরিবারে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়, অনেকটা তেমনই।

এই করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ির ‘মেয়েকে’ কীভাবে আদরযত্ন করব, তা নিয়ে যখন চিন্তায় ঘুম হচ্ছে না, তখনই এমন কিছু ঘটনা ঘটে গেল, যা আপনাদের না বলে পারছি না। আমাদের বাড়িতে নিয়ম, মা প্রতিদিন আলাদা আলাদা চালের ভোগ খান। এ বাড়ির পুজো প্রথম শুরু হয় ঢাকা বিক্রমপুরে। তাই এখনও সন্ধিপুজো আর নবমীর ভোগটা ওখানকার চাল আনিয়েই রান্না করার রীতি আমাদের। কিন্তু এ বার তো সব জায়গাতেই বাধা। কী করে কী হবে এ সব ভাবতে ভাবতেই যখন মন খারাপ, ঠিক তখনই ব্যবস্থা হয়ে গেল। বাংলাদেশের হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে গাড়িতে করে মায়ের চাল পৌঁছে গিয়েছে আমাদের বাড়িতে। একটা টাকাও লাগেনি কিন্তু। কী বলি বলুন তো একে? নেহাতই কাকতালীয়, নাকি কোনও অলৌকিক দৈবযোগ?আরও আছে।মা নবমীতে খান পদ্মার ইলিশ, আর দশমীতে গঙ্গার ইলিশ। এ বার ভয় ছিল সে সবের জোগাড়যন্ত্র করে উঠতে পারব কি না। সে সবও ঠিক ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘একলা আমি'র সবটা জুড়ে ছিল পিসির বাড়ির পুজো

মা বাড়িতে এসে গেলে আর বাড়ি থেকে বেরই না আমরা।

আমাদের পুজোয় কিন্তু দেবীর বাহন অর্থাৎ সিংহেরও একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। অন্য জায়গায় সিংহের চোখ আঁকা হয়। আমাদের ব্যবহার করা হয় এক বিশেষ ধরনের মার্বেল বা গুলি। এ বার সেই গুলি কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সে কী অবস্থা! হঠাৎ করেই এক দিন দেখি পাড়ার ছেলেরা ওরকমই গুলি নিয়ে খেলছে। ওদের কাছে জিজ্ঞাসা করতেই দোকান দেখিয়ে দিল। মার্বেলগুলিও জোগাড় হয়ে গেল ঠিক। অবাক কাণ্ড!

ভেবেছিলাম এ বার পুজোয় বুঝি বাইরের কেউ আসতে পারবেন না। কিন্তু সবাই আসছেন। শুধু আসছেনই না, পুজোর ক’টা দিন তাঁরা ঠিক করেছেন আর নিজেদের বাড়িতে না গিয়ে এখানেই কাটাবেন। বাড়ির সামনেই গেস্ট হাউজ ভাড়া করা হয়েছে। ভাগে ভাগে সবাইকে নেমন্তন্ন করা হচ্ছে, যাতে ভিড় না হয়।

আরও পড়ুন: ভয় উড়িয়ে বাড়ির পুজোতেই ডবল মজা!

আর একটা মজার ব্যাপার হল, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরাও এ বার বলে রেখেছে-‘সুদীপা, এ বার তো বাইরে যাওয়াটা রিস্ক, তাই পুজো কিন্তু তোর বাড়িতেই কাটাব।’ভাবুন তবে! ইতিমধ্যেই বাড়িতে স্যানিটাইজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার তো মায়ের ফুল থেকে কাপড়জামা, সবই স্যানিটাইজ করতে হবে। এত দিন পর মেয়ে বাড়ি ফিরছে। তাঁর যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তা তো আমাদেরকেই দেখতে হবে, তাই না? কুমোরটুলিতে যে জায়গায় প্রতিমা গড়া চলছে, সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে মায়ের শাড়ি, গয়না। আমাদের নিয়ম রয়েছে, মা বাড়িতে এসে গেলে আর বাড়ি থেকে বেরই না আমরা। তাই পুজোর ক’টা দিন বাড়িতেই থাকব আর জমিয়ে মজা করব সবাই মিলে। সত্যি কথা বলতে, এই পুজো যেন বাড়ির সবাইকে আরও কাছাকাছি এনে দিল। আর মাত্র কয়েকটা দিন। এর পরেই বাড়ি জুড়ে ঢাকের আওয়াজ, ফুলের গন্ধ আর হাসি মাখা মুখ... মা আসছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy