Advertisement
E-Paper

পুজোর আগেই বন্ধ হয়ে যাবে 'কাদম্বিনী' ধারাবাহিক ভাবিনি!

অদ্ভুত একটা ব্যাপার। পুজো আছে। আমি আছি। অষ্টমীর অঞ্জলি নেই!

ঊষসী রায়

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ১৩:০৯
Share
Save

গত মাসেও জানতাম পুজোয় কাজ থেকে ছুটি পাব তিন দিন। কেউ ভাবতেও পারিনি, আচমকা সব থেমে যাবে। পুজোর আগেই বন্ধ হয়ে যাবে ‘কাদম্বিনী ধারাবাহিক। প্ল্যান যদিও কিছুই করিনি এ বার। শুধু এ বছর কেন? কোনও বছরই করি না। যতই ঠিক করি, এটা করব, সেটা করব, শেষ মুহূর্তে সবই দেখি চৌপাট! ঘেঁটে ‘ঘ। তাছাড়া, যাকেই জিজ্ঞেস করি, কী করবে ২০২০-তে? সেই-ই বলে, ঠিক করিনি। কিচ্ছু ঠিক হয়নি!

বছর ভর পুজো শপিং...

শপিং....! শব্দটা শুনলেই ফূর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ। কারণে অকারণে সুযোগ পেলেই শপিং করি। এপ্রিল পর্যন্ত এ ভাবেই ওয়েস্টার্ন, ইন্দো ওয়েস্টার্ন, শাড়ি--- কিনেছি অনলাইনে। দোকান থেকে। সে সব ডাঁই হয়ে জমে। ফলে, পুজোর আগে আর কিচ্ছু নয়। অন্তত এখনও তেমনই ভেবে রেখেছি। একটা বছর জামা না কিনলে কী হয়?

অনেকেই মজা করে জানতে চাইছেন, ডিজাইনার মাস্ক কিনবি না? এই ব্যাপারেও আমি খুব লাকি। একটি সংস্থা ইতিমধ্যেই সাতটি ডিজাইনার মাস্ক উপহার দিয়েছেন। ওই দিয়ে দিব্য পুজো কেটে যাবে। কী বলুন?

আমার ডায়েট করা ধাতে নেই।

হে মা দুগ্গা... এ বছর যেন অঞ্জলি দিতে পারি!

অদ্ভুত একটা ব্যাপার। পুজো আছে। আমি আছি। অষ্টমীর অঞ্জলি নেই! নেই মানে ছোট থেকে কিশোরী, তরুণী বেলা কাটিয়ে ভরন্ত যুবতী। অথচ আমার জীবনে পুজোর অঞ্জলি নেই। আমি সন্ধি পুজোর অঞ্জলি দিয়েছি। আসলে আমার জীবনে পুজো দু’রকমের--- দেশওয়ালি আর কলকাত্তেওয়ালি। মামার বাড়ি কৃষ্ণনগর। বাবার দেশ নদিয়া। ছোট থেকেই পাড়ার ঠাকুরের পায়ে প্রণাম ঠুকে ধাঁ দেশের বাড়িতে। লক্ষ্মীপুজো কাটিয়ে ফের কলকাতায়। এটা হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত। কলকাতার পুজো ঠিকঠাক দেখেছি ২০১৭-য়। একটু বড় হওয়ার পরে হয় বন্ধুদের সঙ্গে, নয় বাড়ির সবার সঙ্গে বাইরে চলে গিয়েছি ঘুরতে। এক বছর হিমাচল। এক বছর ফালুট। এ ভাবেই নানা কারণে প্রতি বছরের অঞ্জলিই মিস।

আরও পড়ুন: দশমীতে মাকে বরণ করে সিঁদুর খেলি, লোকে দেখে বলে শ্বেতা বিবাহিত!

তবে মনে হচ্ছে, এ বছর মা আমাকে টানতেও পারেন। অতিমারির কারণে কোথাও যাব না। অষ্টমীর সকালে বাড়িতেই মানে পাড়াতেই হয়ত থাকব। হে মা দুগ্গা... এ বছর যেন অঞ্জলি দিতে পারি! তবে অঞ্জলি না দিতে পারার দুঃখ পর পর তিন বছর ধরে ভুলে রয়েছি ছোট পর্দায় মা দুর্গার কোনও না কোনও রূপ সেজে। এ বছর যেমন আমি শতাক্ষী। এটাও দেবীর আশীর্বাদ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারি।

ভোগের লুচি, খিচুড়ি... এ বছরেও হবে তো...!

বিশাল মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এটা আমার। পুজোয় ভাল-মন্দ খাবে না বাঙালি, হয় না। আমিও সেই দলেই। তার মধ্যেও যদি স্পেশাল কিছু থাকে সেটা পুজোর ভোগ। পুজোর এই ক’দিনে জমিয়ে আড্ডা আর বন্ধুদের বাড়ির লুচি, খিচুড়ি ভোগ আমার চাই-ই। কিন্তু এ বছর কোথা থেকে পাই! আদৌ পাব কিনা সেটাও বুঝে ওঠা দায়। বাকি খাওয়াদাওয়া বন্ধ যাবে না, এটা জানি।

আরও পড়ুন: ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম, পুজোর ভিড় দেখলেই তাই দশ হাত দূরে!

আমার ডায়েট করা ধাতে নেই। এমনিতেই সারা বছর নিত্য নতুন রেস্তরাঁয় গিয়ে নতুন নতুন পদ চেখে বেড়াই। লকডাউনেও ভরপেট খাওয়া হয়েছে। এখন ইমিউনিটি বাড়াতে বলছেন ডাক্তারবাবুরা। আমি তার ভরপুর সুযোগ নেব পুজোয়। চাইনিজ থেকে চিকেন, বিরিয়ানি থেকে রসমালাই হয়ে পিৎজা--- কিচ্ছু বাদ দেব না। তবে বাড়িতে রান্নাবান্নার পাট থাকবে না। এমনিতেই ভিড় এড়াতে রেস্তরাঁ এড়াই। এ বছর তো কথাই নেই। অনলাইনে অর্ডার করে বাড়িতে পায়ের উপর পা তুলে বসে খাব।

পুজোর ‘চারটে দিন জমিয়ে দিন’ গোছের ব্যাপার।

কলকাতা বনাম মফফসল...

দুটো পুজো দু’রকম। আগে দেশের বাড়ির কথা বলি। নদিয়া, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর--- এই সব অঞ্চলে জাঁকজমক বেশি হয় জগদ্ধাত্রী পুজোয়। তা বলে নমঃ নমঃ করে দুর্গা পুজো হয় সেটাও নয়। তবে ওই সব অঞ্চলের লোকেদের ভাব, আমাদের পুজো মানে জগদ্ধাত্রী পুজো। তখন জাস্ট জমিয়ে দেব। কলকাতা তার উল্টো। ‘চারটে দিন জমিয়ে দিন’ গোছের ব্যাপার। চারিদিক ঝলমলে আলোয়। কোথাও গান, কোথাও সানাই। রাস্তায় মানুষের ঢল। ঠাকুর দেখতে বেরোলে চেনাজানাদের সঙ্গে দেখা হবেই। আড্ডা শুরু। কলকাতার এই আত্মীয়তা, আন্তরিকতা খুব টানে। কিন্তু প্যান্ডেল হপিং টানে না। লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা! কোনও কালেই নেই। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ক্লান্ত। তার চেয়ে তৃতীয়ায় ঠাকুর দেখব ফাঁকায় ফাঁকায়। বড় বড় পুজোর।

আরও পড়ুন: এ বার না হয় একটু অন্য রকম পুজো হোক

ফিতে কাটতে উঠে নিজেকেই মনে হয়েছে ‘দেবী’!

এটাও একটা বিশাল পাওয়া। প্যান্ডল উদ্বোধন। অভিনয় সূত্রে প্রচুর ফিতে কাটার সুযোগ পেয়েছি। শুধু দুর্গা নয়, কালী, জগদ্ধাত্রী পুজো সব মিলিয়ে। গেল বছরেই ফিতে কেটেছি ১৩-১৪টি মণ্ডপের। চতুর্থী-পঞ্চমী নিয়ে। দুর্দান্ত লাগে। বিশেষ করে যখন মঞ্চে তুলে দেয়। সবাই তখন আমায় ঘিরে। দেখছে আমায়। আমি লাইমলাইটে। প্রতিমার সামনে....।

একটা সময় মনে হতে থাকে, আমার মধ্যেই যেন দেবীর অবস্থান। দেবীতে রূপান্তরিত আমি!

Durga Puja 2020 Celebrity Durga Puja Celebration Durga Puja Celebration 2020 Durga Puja Special Durga Puja Nostalgia Tollywood Puja Celebration Ushasi Ray

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।