তখন আমি টুয়েলভে পড়ি বা সদ্য কলেজে পড়ি। আমার দাদু তখনও বেঁচে ছিলেন। আর কী হয়, নর্থ কলকাতায় অলিগলিতে পুজো হয়। তখন হত কী আমার দাদু একটা রিকশা ভাড়া করতেন। ওই রিকশায় আমাকে আর আমার তুতোভাইকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরতেন। ভাইকে দাদু কোলে বসিয়ে নিতেন আর আমি পাশে বসতাম। রিকশা নিয়ে অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে আমরা ঠাকুর দেখতাম, আইসক্রিম খেতাম, ফুচকা খেতাম... যা মনে হত, চোখের সামনে দেখতাম তাই খেতাম। খুব মজা হত। নবমীর দিন বাড়ির সবাই, মাসি, এবং আত্মীয়রা মিলে একসঙ্গে খেতে যেতাম। সে একটা ভীষণ ভাল সময় ছিল।
কিন্তু অভিনয়ে আসার পর একটা অন্য সার্কল তৈরি হয়ে গেল। অন্য জগৎ। সারা ক্ষণ কাজ। পুজোর মধ্যেও নানা শো থাকে। মা-বাবার সঙ্গেও খুব বেশি কথা হয় না। দিনে চোদ্দো ঘণ্টা শুট করে ঘরে ফেরার পর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আবার সকালে উঠে শুটিংয়ে বেরিয়ে যেতে হয়। আবার যে কোনও অভিনেতার পক্ষে কাজ না করেও থাকা মুশকিল। আমিও কাজ ছাড়া থাকতে পারব না।
আগে যেটা হত, বিসর্জনের পর পরীক্ষা শুরু হত। পুজোর সময় মনে হত কয়েকটা দিন বেশ ভাল আছি। পুজো শেষ হলেই তো সেই পড়তে বসতে হবে। সে সব তো এখন আর নেই।
আরও পড়ুন:বিসর্জনেও মিস করছি ‘ময়ূরপঙ্খী’-র পুরো টিমকে: সৌম্য
আরও পড়ুন:‘বকুল কথা’ র সেট ভুলে দশমী এলেই জলঙ্গিতে ভেসে বেড়ানো মনে পড়ে: ঊষসী
তবে আগের বছরের থেকে এই বছরের পুজো বেশ ভাল কেটেছে। কিন্তু কোথাও গিয়ে মনে হয় খুব একা হয়ে যাচ্ছি। পুজোর মধ্যেও মানুষকে এন্টারটেন করতে করতেই কেটে যাচ্ছে। নিজের জন্য সময় কমে গিয়েছে। অনেকে ভাবেন যে অ্যাক্টর হয়ে নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা ভাবছি, কাছের মানুষদের সময় দিতে পারছি না। কিন্তু তা নয়। আমি আগে যে রকম ছিলাম সে রকমই আছি। অভিনেতাদের জীবন খুব কমপ্লিকেটেড। নিজের জন্য বিশেষ স্পেস থাকে না। আগে যে রকম সহজ ভাবে ঘোরাঘুরি করতে পারতাম এখন আর পারি না। ক’দিন আগে একটা প্রয়োজনে কোনও এক শপিং মলে গিয়েছিলাম। দেখলাম পুরো মবড হয়ে গেলাম। আগে এ রকম হত না। ফ্যানদের জন্যই আমরা বেঁচে আছি। তাঁদের ধন্যবাদ। কিন্তু অভিনেতাদেরও ব্যক্তিগত স্পেস লাগে সেটা তাঁদেরও বুঝতে হবে। আমি একেবারে অভিনয়ের বেসিক স্টেজে আছি। আমার এখনই এ রকম মনে হচ্ছে। তা হলে যাঁরা অনেক দিন ধরে কাজ করছেন তাঁদের অবস্থা কী হয় বোঝাই যাচ্ছে।
আমি দুর্গার খুব ভক্ত। তাই পুজোর সময় মনে হয় সবাইকে সুস্থ রেখে, ভাল ভাবে যেন দিনগুলো কাটাতে পারি। সবাইকে নিয়ে সুস্থ থাকাটা উৎসবের সময় খুব দরকারি। এ বারের পুজোও বন্ধুদের সঙ্গে খুব ভাল ভাবে কাটিয়েছি। পুরো রাত জেগে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখেছি। তৃতীয়া থেকে ঠাকুর দেখা শুরু করেছি এবং অনেক জাঙ্ক ফুডও খেয়ে নিয়েছি। খুব ওয়ার্ক আউট করতে হবে। সেটাও মাথায় আছে। আর ভক্তদের খুব ভালবাসা পাচ্ছি। সেটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এর পর শুটিং শুরু হবে। দ্যাটস আ ভেরি নাইস থিং। আমার মনে হয় না যে শুটিং ছাড়া আমি বাঁচতে পারব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy