Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Durga Puja 2019

ছোটবেলার স্মৃতিগুলো টাটকা হয়ে ওঠে এই সময়ে: মেহতাব

আত্মীয় বন্ধুরা যেমন ইদে উপহার দিয়েছে, তেমনই পুজোতেও নানা উপহার পেয়েছি।

মেহতাব হোসেন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ২০:৩৫
Share: Save:

নীলচে আকাশ আর ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ বেশ জানান দিচ্ছে ঢাকে কাঠি পড়ল বলে। রাস্তাঘাটের ভিড়ই বলে দিচ্ছে, হাতে সময় কম, মানুষ শেষ মুহূর্তে প্রিয়জনের জন্যে উপহার কিনছে। এই সময়টা আমার খুব ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। আলোর রোশনাই, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা, নাচতে নাচতে ভাসান যাওয়ার স্মৃতিগুলো টাটকা হয়ে ওঠে এই সময়ে।

তবে ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে পরার পর অনেক কিছুতেই রাশ টানতে হয়েছে। কারণ, যে কোনও স্পোর্টসই সাধনার। টিকে থাকতে হলে চাই সংযম। এগরোল-বিরিয়ানি-কোল্ড ড্রিংকসের লোভে পা দিলে আর যাই হোক ফিটনেস থাকবে না। তাই প্যান্ডেলে ঘোরা হোক কিংবা ফাস্টফুড খাওয়া, রাশ টানতে হয়েছে আমায়। তবে ওই যে মানুষ সারা বছরের গ্লানি ভুলে আনন্দ করছে, মণ্ডপে পুজোর ভোগ খাচ্ছে, এগুলির মধ্যে মিশে যাওয়ার একটা আমেজ আছে। সেটাই তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করি আমি। তবে শেষ কয়েক মাসে জীবনে বদল এসেছে। ফুটবলার থেকে কোচ হয়েছি এখন। মাঠে যাওয়ার উদ্দেশ্যও গিয়েছে বদলে। বল পায়ে ছুটতে হচ্ছে না আর। এখন অনেকটাই হাত পা ছাড়া জীবন। তবে ফিট থাকা এমন একটা অভ্যেস, সেটা রাতারাতি বদলাবেও না।

ছোটবেলায় পুজো মানেই ছিল নতুন জামা। আত্মীয় বন্ধুরা যেমন ইদে উপহার দিয়েছে, তেমনই পুজোতেও নানা উপহার পেয়েছি। তাই একটা অপেক্ষা কাজ করত। এই বয়সে এসে উৎসাহটা আছে, অপেক্ষাটা আর নেই। শপিং মলের দৌলতে এখন সারা বছরই শপিং করি, জামাকাপড় কিনি। তাই পুজোর কেনাকাটা নিয়ে তেমন উৎসাহ নেই। এখন আগে থেকে প্ল্যান করি কী ভাবে এই চার দিন কাটাব। খেলোয়াড় জীবনে পরিবারকে বেশি সময় দিতে পারিনি। খেলার জন্য রাত করে ঠাকুরও দেখিনি। আমার জন্য স্ত্রী মৌমিতাও অনেক ত্যাগ করেছে। আইএসএল-এর জন্য পুজোর সময়ে কলকাতার বাইরে থাকতে হয়েছে। সেই সময়ে মনটা পড়ে থাকত এই কলকাতাতেই। এখন দিনগুলো আবার অন্য রকম। এ বারের পুজোটা আমার কাছে অন্য রকম। পুজোর প্রতিটি দিনই পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করব। সারা বছরের অভিযোগ পুষিয়ে দেওয়ার এটাই যে সেরা সময়। পুজোর চারটে দিন আমার কাছে নিখাদ আড্ডা আর পরিবারের নানা আবদার মেটানোর এক অখণ্ড অবসর।

আরও পড়ুন: সপরিবার কলকাতা ছাড়ছি পুজোতে: ঋত্বিক

আমি ঢাকুরিয়ায় থাকি, পাশেই পুজোমণ্ডপ। সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারব। ষষ্ঠীর আড্ডাটা বাড়িতেই দেব ভাবছি। আসলে পুজোয় বড় প্যান্ডেলগুলোতে যা ভিড় হয়, তাতে ঠাকুর দেখতেই বের হওয়া মুশকিল হয়ে যায়। আমি অবশ্য বেশি ভিড় পছন্দ করি না। এ বার ছেলে-স্ত্রীকে নিয়ে রাতে ঠাকুর দেখতে বেরবো। তবে মণ্ডপের ভিতরে যাব না। আমি গাড়িতেই অপেক্ষা করব। সপ্তমীতে বাড়িতে বন্ধুরা আসবে। ওদের সঙ্গেই খোশগল্পে সময় কেটে যাবে। খাওয়াদাওয়াও হবে। নিয়ম যে একেবারে ভাঙি না তেমন ধনুর্ভাঙা পণ নেই। এ সব দিনে ডায়েট একটু শিথিল হয়েই যায়। অষ্টমীতে গ্র্যান্ড আকর্ষণ হল পাড়ার ভোগ। ফিটনেসের লাল চোখ আর মানব না। ভোগ একটু চেখেই দেখব। নবমীতে মৌমিতাকে বলেছি জমিয়ে বিরিয়ানি করতে। যা হবে পরে দেখা যাবে। পুজো শেষে ওয়ার্ক আউট করে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলব।

আরও পড়ুন:দিদিদের সঙ্গে রাত জেগে ঠাকুর দেখব: পূজারিণী​

পুজোর গ্র্যান্ড ফিনালেটা মাঠের মতো নয়। সকাল থেকেই মন ভার থাকে সবার। প্যান্ডেলে সিঁদুর খেলা হয়। আমি অবশ্য ওই সব থেকে সাত হাত দূরে। ছোটবেলায় ভাসানে যেতাম বন্ধুদের সঙ্গে নাচতে নাচতে। তবে এখন আর যাওয়া হয়ে ওঠে না। দূর থেকেই দেখি। প্রতিটি বাঙালির মতোই চোখ চকচক করে। দুর্গার আসা যাওয়ার মাঝেই জীবন নৌকো কত দূর এগিয়ে এসেছে। মনে পড়ে এক বার লেবুতলায় গিয়েছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে, হাতে পড়ে মাত্র দশ টাকা। সেই সম্বল করেই লেবুতলা থেকে হেঁটে হেঁটে ঢাকুরিয়া ফিরে চার বন্ধু মিলে টাকা ভাগাভাগি করে কোল্ডড্রিংকস খেয়েছি। এখন হয়তো এই সামান্য খরচ কোনও ব্যাপার নয়, তবে তখনের হিসেবে তাই ছিল মহার্ঘ্য। সেই স্বাদ এখনও লেগে রয়েছে। পুজো এলে সেই স্বাদগুলোই পাই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy