সৌরভ দাস
আনন্দ, কোলাহল, ঢাকের শব্দ। এগুলোই পুজোর সময়ের ‘স্পেশাল শব্দ’ আমার কাছে। তবে পুজোর সময়ের থেকে পুজো আসছে আসছে ব্যাপারটাই আমার কাছে বেশি ইন্টারেস্টিং। পুজোর আর পাঁচ দিন বাকি, চার দিন বাকি, তিন দিন বাকি... এই কাউন্টডাউনটা আমার কাছে খুব উপভোগের। কাউন্টডাউনের একটা স্পেশাল আনন্দ আছে। কিন্তু পুজো চলে এল মানেই তো পুজো শেষ। অষ্টমীতে মজা হচ্ছে কিন্তু একটা কষ্টও হচ্ছে যে আর হবে না মজাটা। আবার এক বছর অপেক্ষা করতে হবে!
ছোটবেলায় পুজো নিয়ে খুব ইমোশনাল ছিলাম। এখন অতটা আবেগপ্রবণ আর নই। পুজো কাছে এলেই তখন অনেক কিছু মনে হত। এখন অনেক সীমাবদ্ধতা চলে এসেছে জীবনে। অত কিছু আর মনে হয় না। ছোটবেলার মতো আর উপভোগও করি না। তবে হ্যাঁ, এই সময়টা কাজের চাপ কম থাকে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিই, আনন্দ করি।
আগের বছর পুজোয় কলকাতায় ছিলাম। এবছরও শহরে থাকারই প্ল্যান। এমন নয় যে পুজোর কারণেই কলকাতায় থাকব। কিন্তু আমার ভালবাসার মানুষের সঙ্গে, ভালবাসার বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। অষ্টমী বা নবমীতে আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিই, খাওয়াদাওয়া করি। একটা পার্টি টাইপ হয়। এই আড্ডায় অনিন্দিতা (বসু) তো থাকবেই, ঋদ্ধিমা, গৌরব এবং আরও বন্ধুবান্ধব থাকবে। এ ছাড়াও অনেকের বাড়িতে সবাই মিলে গিয়ে আড্ডা হয়। আমার পুরনো পাড়া পর্ণশ্রী বেহালায় যাই। ওখানকার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হয়। পর্ণশ্রীর পুজো আমরাই করতাম। চাঁদাটাদা তুলে আমরাই সব আয়োজন করতাম। পুরোটাই আমাদের এলাকা আরকি। ওখানকার ক্লাবঘরে বসে পুজোর সময় আড্ডা হবে। একটুখানি মুখ ঢেকে… মানে ওই আরকি, তবু আড্ডা হবেই। এই আড্ডাটা না হলেচলবেই না।
আমি খুব যে সাজি এরকম নয়। কিন্তু লোকেরা বলে আমি নাকি স্টাইলিশ। পুজোর ক’টা দিন আমি ধুতি পরতেই পছন্দ করি। এমনিতেই আমার জিনসটিনস খুব একটা পোষায় না। জুতো সাধারণ কিছু, যা ধুতির সঙ্গে যায় সে রকমই পরব। আর হেয়ার স্টাইলও আলাদা কিছু না। মোটামুটি যে রকম সবাই দেখেন, সে রকমই থাকব। সব মিলিয়ে টিপটপ বাঙালিবাবু হয়ে পুজোয় ঘুরতে বেরোব।
আরও পড়ুন: দু’বছর ধরে সিঙ্গল, তবু মেয়ে দেখার উপায় নেই: সুমন
সবার জন্য পুজোর শপিং হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কাউকে এখনও দেওয়া হয়নি। কারণ অনিন্দিতাও এখানে নেই। বাবাও বোনের কাছে দিল্লিতে। সবাই ফিরলে একসঙ্গে পার্টি হবে। পুজোর উপহারও দিয়ে দেব। অনিন্দিতার জাঙ্ক জুয়েলারি খুব পছন্দ। তাই যত রকম সম্ভব জাঙ্ক জুয়েলারি কিনেছি ওঁর জন্য।
আমি আর অনিন্দিতা দু’-তিন দিনের জন্য শহর ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যাব। ষষ্টী, সপ্তমী এখানে কাটিয়ে অষ্টমী, নবমী শহর ছেড়ে ঘুরতে বেরব। দশমীতে ফিরে আসব। তবে কোথায় বেড়াতে যাব এখনও প্ল্যান হয়নি। প্ল্যান হয়ও না। ব্যাপারটা ‘উঠল বাই তো কটক যাই টাইপ’। সেটা নর্থ বেঙ্গল হতে পারে বা কাছাকাছি কোথাও। এই তো সেদিন বিশ্বনাথদার (বসু) সঙ্গে দেখা হল। দশমীতে ওঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। হয়তো ওই দিন ওঁর বাড়িতেই কাটাব আমি আর অনিন্দিতা।
আর পুজোয় খাওয়াদাওয়ার খুব একটা লাগাম থাকে না। থাকার কথাও নয়। বন্ধুরা সবাই এক জায়গায় হলে ভূরিভোজ মাস্ট। আর সব জাঙ্ক ফুড। বাইরে বেরলেই ফুচকাটুচকা সব চলবে। বাড়িতেও বাইরে থেকে আনানো খাবার। ওই সময় প্রতি দিন কাজে সাহায্য করেন যাঁরা, তাঁদের ছুটি। আর নিজেরাও রান্না করব না। তাই বাইরে থেকে এক এক দিন এক এক রকম খাবার আনা হবে। পুজোর দিনগুলো তো চিট ডে। মহিলাদের সঙ্গে নয় অবশ্যই, তবে খাদ্যের সঙ্গে চিটিং। ওই ক’দিন ডায়েটকে একেবারে বাই বাই।
আরও পড়ুন: পুজোয় এ বার দুবাই যাব, অঙ্কুশও থাকবে: ঐন্দ্রিলা সেন
পুজো প্রত্যেক বাঙালির কাছে একই রকম বলে আমার মনে হয়। পুজো আসছে আসছে ফিলিং এক, পুজো এসে গেল ফিলিং এক, পুজো চলে গেল ফিলিং-ও আর এক। উৎসব শেষে আমার মন খারাপটাও তাই অন্যান্য আমবাঙালির মতোই, আলাদা কিছু নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy