প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের কথা বলছি। বন্ধুর বাড়ির গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে খাওয়াদাওয়া সেরে শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলাম সে রাতে। আমি আর আমার এক বন্ধু একসঙ্গেই ছিলাম। বরাহনগর থেকে ট্রেনে উঠে বসেছি। শেষ ট্রেন যেহেতু, ঘড়ির কাঁটা তখন রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার দিকে ছুটছে। বুঝতেই পারছেন, রাত ক্রমশ গভীর হচ্ছে। আর গোটা কামরায় কেবলমাত্র আমরা দু’জন। এখানে বলে রাখি, আমার ওই বন্ধুটি খুব ভাল গল্প বলতে পারে। পরিবেশটাকে আরও জমিয়ে তোলার জন্য ভূতের গল্প ধরল ও।
বেশ রসিয়ে ভূতের গল্প বলছিল বন্ধু। তবে ভয় পাওয়া দূরঅস্ত, ফাঁকা ট্রেনে তাতে রাতের আমেজটাই জমে উঠছিল বরং। আমরা তখন সপ্তম স্বর্গে! আমরা মুখোমুখি বসে। কথা বলতে বলতে বন্ধু হঠাৎ খেয়াল করল কামরার একদম শেষের দিকে দেওয়াল লাগোয়া যে লম্বা বসার সিট থাকে, সেখানে কেউ এক জন শুয়ে রয়েছেন সর্বাঙ্গ ঢেকে। কেবল মাথাটি দেখা যাচ্ছে সামান্য। আমিও ঘাড় ঘুরিয়ে তাঁকে দেখতে পেলাম। তার পরে আবার আমাদের গল্পের পর্ব শুরু হল।
দমদমে ঢোকার মুখে স্বভাবতই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, গোটা গাড়ির আলোও নিভে গিয়েছিল তখন। ঘুটঘুটে অন্ধকার। অস্বস্তি কাটাতে আমরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু করি, বিড়ি ধরাই…পরের স্টেশনে আলো ফিরেও আসে আবার। কিন্তু মূল ঘটনা ঘটল তখনই! ট্রেনের আলো ফিরে আসতেই আমার বন্ধুটি আমাকে বলল যে লোকটি শুয়েছিল, সে আর সেখানে নেই! ঠিক যেন হাওয়া হয়ে গেল! কিন্তু স্টেশনে ঢোকার আগে ও যাবেই বা কোথায়? এখানে দুটো সম্ভাবনা রয়েছে। হয় লোকটি আরও ভিতরে গিয়ে শুয়েছে। নয় তো দাঁড়ানো ট্রেন থেকেই নেমে গিয়েছে! সে যেটাই করুক আমাদের দু’জনের মধ্যে কারওরই ক্ষমতা ছিল না এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার!
ভয় পেলেন? যদি পেয়ে থাকেন, তবে আর একটা মজার গল্প বলি। বহু বছর আগের কথা বলছি। তখন আমার সদ্য বিয়ে হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি গিয়ে রয়েছি। তখন গ্রামের বাড়িতে আর কোথায় শৌচাগার! প্রাতঃকৃত্য সারতে হলে লোটা, বালতি নিয়ে যেতে হল ঘর থেকে অনেক দূর। এক রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে। জানি না সে দিন মাথায় কী ভূত চেপেছিল! এত জায়গা থাকতে সব ছেড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম বাড়ি থেকে সামনেই পুকুর পাড়ে। চোখে তখন লেগে ঘুমের রেশ। কিন্তু কার্যসিদ্ধি হওয়ার আগেই ঘটল অদ্ভুত এক কাণ্ড! ঘুমের ঘোরে পিছনে ফিরে দেখি, আমার শ্বশুর বাড়ির দূরত্বটা যেন একটু বেশিই বেড়ে গিয়েছে। সত্যি বলছি, যখন এসেছিলাম, বাড়িটা এত দূরে ছিল না। কাম-কাজ ঠিকমতো না সেরেই দে দৌড়!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy