সাল তখন ১৯৩৪। ভারত ব্রিটিশদের দখলে। চেক প্রজাতন্ত্র থেকে চারটি গাড়ি এসে থামল কলকাতায়। বিস্লাভ পিটার্সের নেতৃত্বে সাত জনের এই দল এর পর কলকাতা থেকে পাড়ি দেয় বোম্বে এবং ফিরে যায় চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রেগে। এই পুরো যাত্রা পথে তাঁদের সময় লেগেছিল চার মাস। ১২ মে ১৯৩৪ প্রেগ থেকে শুরু হয় তাঁদের পথ চলা। একে একে বালকন্স, টার্কি, এখনকার সিরিয়া এবং ইরাক পার করে তাঁরা এসে পৌঁছায় কলকাতায়। এদের মধ্যে একটি দল আবার আফগানিস্তান হয়ে ভারতে ঢোকে। প্রেগে তাঁরা ফিরে যায় ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪।
তাঁরা ফিরে গেলেও ভারত কিন্তু মনে রেখে দেয় তাঁদের গাড়িগুলো। চেক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা 'স্কোডা' তাদের বিজ্ঞাপনের জন্য এই লং-জার্নি বেছে নেয়। সেই সময় এই ধরণের বিজ্ঞাপন খুব প্রচলিত ছিল। ফলও মেলে হাতেনাতেই। ১৯৩৮-এ দেখা যায় স্কোডা-র ৩৯টি রফতানি বাজারের মধ্যে ভারত উঠে আসে সাত নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৫-র মধ্যে মাত্র ১৫০টি স্কোডা গাড়ি রফতানি হয় ভারতে।
সময়ের সঙ্গে আবার পাল্টে যায় ছবিটা। ২০০১ সালে দ্বিতীয় ইউরোপীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে ভারতের মাটিতে কারখানা খোলে স্কোডা। ভারতেই প্রস্তুত হওয়া শুরু হয় 'অক্টেভিয়া'। এর পর একে একে 'সুপার্ব', 'লোরা', 'ফ্যাবিয়া', 'ইয়েতি' এবং 'রাপিড'-এর মতো মডেল ভারতেই তৈরি করা হয়। এই মুহূর্তে পুনেতে তৈরি হয় ‘রাপিড’ আর ঔরঙ্গাবাদে তৈরি হয় ‘অক্টেভিয়া’, ‘সুপার্ব’ ও ‘কোডিয়াক’ মডেলটি।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই ভারতে পা রাখল বিএমডব্লিউ ৭ সিরিজ
ভারতীয় বাজারে যখন শোনা যাচ্ছে আর্থিক মন্দার কথা, গাড়ি বিক্রি যখন নাকি তলানিতে এসে ঠেকেছে, সেই সময় উল্টো সুর স্কোডার সিইও বেরনহার্ড মায়ারের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী কিছু বছরের মধ্যে অটোমোবাইলের বাজারে ভারত উঠে আসবে তিন নম্বরে। সেই জন্য আমরা নিয়ে আসছি আমাদের 'ইন্ডিয়া ২.০' পরিকল্পনা। আমাদের সঙ্গে থাকবে ফোক্সভাগানও।’’
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই মাত্র ৩.৬৯ লক্ষ টাকায় পাওয়া যাবে মিনি এসইউভি
এখন থেকে ভারতেই তৈরি করা হবে সমস্ত গাড়ি। এই বছরের শুরুতে পুনেতে খোলা হয়েছে টেকনোলজি সেন্টার। যেখানে সাবকন্টিনেটের গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বদল আনা হয় গাড়িতে। তাই এ বার থেকে আর বিদেশ থেকে গাড়ির পার্টস আনা নয়, এখানেই তৈরি করা হবে ৯৫ শতাংশ গাড়ির সরঞ্জাম। পরের বছর দিল্লির প্রগতী ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে চলা অটো এক্সপোতে নিয়ে আসা হবে নতুন মডেল। এবং পরবর্তী সময় ফোক্সভাগেন, ভারতে তৈরি হওয়া গাড়িগুলো বাইরে রফতানি করা যায় কি না সেই বিষয়ও খতিয়ে দেখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy