(বাঁ দিকে) ইব্রাহিম রইসি। মাসুদ পেজ়েশকিয়ান (ডান দিকে)।
প্রয়াত ইব্রাহিম রইসির উত্তরসূরি হিসাবে সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজ়েশকিয়ানকে বেছে নিল ইরান। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সইদ জালিলিকে পরাস্ত করেছেন তিনি। শনিবার ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে পেজ়েশকিয়ান ১ কোটি ৭০ লক্ষ এবং জালিলি ১ কোটি ৩০ লক্ষ ভোট পেয়েছেন।
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট রইসির মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তিকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোখবর। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হননি। এ বারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট চার জন প্রার্থী। পার্লামেন্ট সদস্য পেজ়েশকিয়ান এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য জালিলির পাশাপাশি পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের ঘলিবাফ এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের আর এক সদস্য, কট্টরপন্থী নেতা মোস্তাফা পুরমহাম্মদি ছিলেন ভোটের লড়াইয়ে।
গত ২৮ জুন প্রথম দফার নির্বাচনে কোনও প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় ইরানের সংবিধান অনুযায়ী শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট হয়। প্রথম দফার ভোটে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পেজ়েশকিয়ান এবং জালিলি এই দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথম দফায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সংস্কারপন্থী নেতা, পেশায় হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ পেজ়েশকিয়ান । আর ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন জালিলি।
প্রথম দফার নির্বাচনে ইরানের ৬ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানে যত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম ভোটদানের ঘটনা। তবে শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় ৪৯.৮ শতাংশ ভোটদাতা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে পূর্ব আজ়হারবাইজানে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে রইসির চপার। তাতে ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমিরাবদোল্লাহিয়ানও। দুর্ঘটনায় দু’জনেরই মৃত্যু হয়। ইরানের সংবিধান মেনে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ৫০ দিনের মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট (অন্তর্বর্তিকালীন প্রেসিডেন্ট), পার্লামেন্টের স্পিকার এবং বিচার বিভাগের প্রধানকে নিয়ে গঠিত ‘কাউন্সিল’ দেশে নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। প্রাথমিক ভাবে ছ’জন প্রার্থী থাকলেও পরে দু’জন নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ‘ফাইনালের’ লড়াই হয় পেজ়েশকিয়ান আর জালিলির মধ্যে।