ভারতীয় দলের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
লাল বলের সুইং নেই। পিচে ঘাস নেই। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চলে যাওয়ার ভয় নেই। ফলে বুধবারের ইডেনে ভারতীয় দল জিতল দাপট দেখিয়ে। সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরতেই বোঝা গেল কেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারত বিশ্বসেরা। ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৩২ রান করে। ভারত সেই রান তুলে নেয় ১২.৫ ওভারে।
শামিহীন ইডেন
বুধবার সকলের নজর ছিল ভারতীয় দলে মহম্মদ শামির প্রত্যাবর্তনের দিকে। কিন্তু ভারতীয় দলের প্রথম একাদশ দেখে অবাক হয়ে যান সকলে। শামিকে বাদ দিয়েই মাঠে নামেন সূর্যকুমার যাদবেরা। বল করতে পারেন এমন ছ’জন ক্রিকেটারকে ভারত প্রথম একাদশে রেখেছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জোরে বোলার হিসাবে ভারতীয় শিবিরের প্রথম পছন্দ আরশদীপ সিংহ। তাঁর সঙ্গে জোরে বোলিংয়ের দায়িত্ব সামলানোর জন্য ছিলেন দুই অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য এবং নীতীশ কুমার রেড্ডি। স্পিনার হিসাবে দলে ছিলেন বরুণ চক্রবর্তী, রবি বিশ্নোই এবং অক্ষর পটেল। দলের ভারসাম্যের স্বার্থেই হয়তো শামিকে রাখা যায়নি প্রথম একাদশে।
আরশদীপের ধাক্কা
ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কাটা দেন আরশদীপ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কেন পেসারদের মধ্যে তিনিই প্রথম পছন্দ তা বুঝিয়ে দিলেন। বাঁহাতি পেসার প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন। ফিল সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন আরশদীপ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফেরান বেন ডাকেটকে। দুই ইংরেজ ওপেনারকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে নজিরও গড়েন আরশদীপ। এত দিন টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ছিলেন চহল। ৮০টি ম্যাচে ৯৬টি উইকেট রয়েছে তাঁর। তবে দীর্ঘ দিন জাতীয় দলে ব্রাত্য তিনি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন আরশদীপ। টি-টোয়েন্টিতে ৬১টি ম্যাচে তাঁর উইকেটের সংখ্যা ৯৭।
ভারতীয় বোলারদের দাপট
আরশদীপ, হার্দিক এবং অক্ষর দু’টি করে উইকেট নেন। তিনটি উইকেট নেন বরুণ। শুরুতে পেস, মাঝে স্পিন এবং শেষে আবার পেস যখনই যে বোলার এসেছেন, উইকেট নিয়েছেন। রবি বিশ্নোই উইকেট না পেলেও মাত্র ২২ রান দেন তিনি। কৃপণ বোলিং এবং ধারাবাহিক ভাবে উইকেট তুলে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেয় ভারত। জস বাটলার ছাড়া ইংল্যান্ডের কোনও বোলারই সে ভাবে রান করতে পারেননি। ১৩২ রানে শেষ হয়ে যায় ইনিংস।
একা কুম্ভ বাটলার
ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাট হাতে লড়াই করলেন একমাত্র অধিনায়ক জস বাটলার। আইপিএলে নিয়মিত খেলে ভারতের মাঠ তাঁর পরিচিত। ইডেনে বাটলারের খেলতে কোনও সমস্যা হয়নি। তিনি ছাড়া বাকি সকল ইংরেজ ব্যাটারকে দেখে মনে হল তাঁরা অন্য পিচে খেলছেন। বরুণ, আরশদীপকে সামলে ৪৪ বলে ৬৮ রান করলেন বাটলার। দলের আর কোনও ব্যাটার ২০ রানের গণ্ডিও পার করতে পারেননি।
অভিষেক-ঝড়
ব্যাট করতে নেমে শুরুতে সঞ্জু স্যামসন (২৬) যখন বড় শট খেলছিলেন, তখন ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়েছিলেন অভিষেক। পিচটা বুঝে নিচ্ছিলেন। সঞ্জু আউট হওয়ার পরেই শুরু হয়ে যায় অভিষেক-ঝড়। ৩৪ বলে ৭৯ রান করেন পঞ্জাবতনয়। আটটি ছক্কা মারেন তিনি। সঙ্গে পাঁচটি চার। মার্ক উডের ১৫৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে আসা বল যে ভাবে ফ্লিক করে ছক্কা মারলেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তরুণ ব্যাটার রীতিমতো ইংরেজ বোলারদের শাসন করলেন। যে কারণে সূর্যকুমার যাদব (০) রান না পেলেও সমস্যা হয়নি। অভিষেক আউট হওয়ার পর ম্যাচ শেষ করেন তিলক বর্মা (১৯) এবং হার্দিক (৩)।