রেবন্ত রেড্ডি এবং দীপা দাশমুন্সির সঙ্গে তেলঙ্গানায় দলত্যাগী বিআরএস বিধান পরিষদ সদস্যেরা। ছবি: সংগৃহীত।
গত বছর বিধানসভা ভোটের আগেই তেলঙ্গানায় ধারাবাহিক ভাঙন শুরু হয়েছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের (কেসিআর) দল ‘ভারত রাষ্ট্র সমিতি’ (বিআরএস)-তে। বিধানসভা ভোটে হার এবং লোকসভা নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পরেও সেই প্রবণতা অব্যাহত।
ছ’জন বিধায়ক এবং প্রবীণ রাজ্যসভা সাংসদ কে কেশব রাওয়ের পরে এ বার দাক্ষিণাত্যের ওই রাজ্যে বিআরএসের ছ’জন বিধান পরিষদ সদস্য কংগ্রেসে যোগ দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এবং এআইসিসির পর্যবেক্ষক দীপা দাশমুন্সির উপস্থিতিতে শুক্রবার কংগ্রেসে যোগ দেন তাঁরা। এর ফলে ৪০ সদস্যের বিধান পরিষদে বিআরএসের সদস্যসংখ্যা ২৫ থেকে কমে হল ১৯। কংগ্রেসের চার থেকে বেড়ে ১০।
প্রসঙ্গত, সংসদের মতো রাজ্যের আইনসভাও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষটি বিধান পরিষদ এবং নিম্নকক্ষটি বিধানসভা হিসেবে পরিগণিত হয়। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং জম্মু-কাশ্মীরে এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে। বিধানসভার মতোই বিধান পরিষদেও ‘নির্বাচিত’ হতে হয়। কিন্তু সেখানে সাধারণ নাগরিকেরা ভোট দেন না। সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক ভোট দেন বিধায়ক, পঞ্চায়েত-পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন এবং ক্ষেত্রভুক্ত পেশার মানুষেরা। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গেও একটা সময় বিধান পরিষদ ছিল। সাতের দশকে যুক্তফ্রন্টের সরকার ক্ষমতায় এসে তার অবলুপ্তি ঘটায়।
গত নভেম্বরে ১১৯ আসনের তেলঙ্গানা বিধানসভা ভোটে ৬৪টি আসনে জিতে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। বিআরএস ৩৯, বিজেপি ৮ এবং হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) ৭টি বিধানসভা আসনে জেতে। এর পর লোকসভা ভোটে এ বার তেলঙ্গানার ১৭টি আসনের মধ্যে ৮টি করে জেতে কংগ্রেস এবং বিজেপি। হায়দরাবাদে জেতেন মিম প্রধান ওয়েইসি। কিন্তু বিআরএস খাতা খুলতেই পারেনি। এই আবহে একের পর এক নেতার দলত্যাগে কার্যত অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের দল।