পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দৃশ্য। — ফাইল চিত্র।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে)-কে ‘বিদেশি ভূখণ্ড’ বলে স্বীকার করে নিল পাকিস্তান সরকার! ইসলামাবাদ হাই কোর্টে শুক্রবার জমা দেওয়া হলফনামায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার নিযুক্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরের যে অংশ থেকে কাশ্মীরি কবি এবং সাংবাদিক আহমেদ ফারহাদ শাহকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তা পাকিস্তানের অংশ নয়, বিদেশি ভূখণ্ড।’’
১৯৪৮ সালে হামলা চালিয়ে তৎকালীন রাজন্যশাসিত রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের একাংশ বেআইনি ভাবে দখল করেছিল পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজা হরি সিংহ ভারতভুক্তি চুক্তি সইয়ের পর পাকিস্তানের জবরদখল করা ভূখণ্ডের একাংশ মুক্ত করেছিল ভারতীয় সেনা। কিন্তু বাকি অংশ পাকিস্তানের দখলে থেকে যায়। সেখানে পৃথক আইনসভাও গঠিত হয় পাক সরকারের তত্ত্বাবধানে।
এই পরিস্থিতিতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের স্বাধীনতাপন্থী সাংবাদিক ফারহাদের গ্রেফতারি নিয়ে মামলায় সরকারি আইনজীবীর মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। ইসলামাবাদ হাই কোর্ট ফারহাদকে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দেন, যে হেতু পাক অধিকৃত কাশ্মীর একটি বিদেশি ভূখণ্ড তাই ধৃত ফারহাদকে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে হাজির করানো যাবে না। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালত প্রশ্ন তোলে— ‘‘যদি তা বিদেশ ভূখণ্ডই হবে তো কোন অধিকারে সেখানে প্রবেশ করে পাক সেনা এবং রেঞ্জার্স বাহিনী শিবির বানায়? কোন অধিকারে বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে?’’
প্রসঙ্গত, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের পাশাপাশি ব্রিটিশ জমানায় ‘রাজন্যশাসিত রাজ্য’ জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ ছিল কারাকোরাম পর্বত ঘেরা গিলগিট-বালটিস্তান। পাকিস্তান ১৯৪৮ সালে জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকার কিছু অংশের পাশাপাশি ওই অঞ্চলটিও দখল করে। কিন্তু গিলগিট-বালটিস্তানকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজফ্ফরাবাদের নিয়ন্ত্রণে না এনে ‘ফেডেরালি অ্যাডমিনিস্টারড নর্দার্ন এরিয়া’ নাম দিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নয়া নামকরণের পরে ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে প্রথম স্থানীয় আইনসভার ভোট হয় গিলগিট-বালটিস্তানে।