পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জনঅসন্তোষ। ছবি: সংগৃহীত।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জনঅসন্তোষ প্রতিরোধ করতে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে পাক পুলিশ ও আধাসেনা। পাক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে জনতা-রক্ষী বাহিনীর সংঘাতের ছবি। রীতিমতো একে ৪৭ বের করে শূন্যে গুলি চালাতে দেখা যাচ্ছে পাক রেঞ্জারদের। এমনকি ছুটন্ত জনতার দিকেও তাক করা হচ্ছে বেয়নেট। দু’জন প্রতিবাদীর মৃত্যুর খবরও মিলেছে। তবে তাঁরা গুলিতেই মারা গিয়েছেন কি না, স্পষ্ট নয়।
চড়া রাজস্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখে অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের অসন্তোষ অনেক দিন ধরেই জমা হচ্ছিল। সূত্রের দাবি, ওই অঞ্চলে উৎপন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে পাকিস্তানের অন্যান্য শহরে। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা। এরই মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি (জেকেজেএএসি) নামে একটি স্থানীয় সংগঠনের তরফে গত মাসে গোটা রাজ্য থেকে মুজফ্ফরাবাদগামী একটি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। মিছিল হওয়ার কথা ছিল, আজ অর্থাৎ ১১ মে। তার আগে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ মুজফ্ফরাবাদ ও মিরপুরে হানা দিয়ে ওই সংগঠনের বহু নেতাকে গ্রেফতার করে। তার প্রতিবাদে শুক্রবার উপত্যকায় হরতালের ডাক দেওয়া হয়। মুজফ্ফরাবাদ-সহ সামাহনি, সেহানসা, মিরপুর, রাওয়ালকোট, হাত্তিয়ান বালা, খুইরাট্টা, তত্তপানি— সর্বত্রই হরতাল পালিত হয়। তারই মধ্যে মুজফ্ফরাবাদে প্রতিবাদীদের একটি মিছিল বেরিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ সেই মিছিল পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী আটকাতে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়। মিছিল থেকে পুলিশের দিকে উড়ে আসতে থাকে পাথর। পুলিশ এবং আধাসেনাও পাল্টা আক্রমণে নামে। কাঁদানে গ্যাস, ছররা, বুলেট বাকি থাকেনি কিছুই। শূন্যে গুলি চালানোর পাশাপাশি জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে। সন্ধে পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে দফায় দফায়। হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করানো হয়। ছাত্র এবং মহিলাদের কান্নার ছবি ধরা পড়েছে ভিডিয়োতে। দু’জন প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। গ্রেফতার অন্তত ৭০ জন।
প্রসঙ্গত ভারতের চলতি লোকসভা নির্বাচনে পাকিস্তান প্রসঙ্গ বারবারই উঠছে। ঘটনাচক্রে শনিবারই অমিত শাহ তেলঙ্গানার জনসভা থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কথা তুলেছেন। তিনি কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের পুরনো ভিডিয়ো এবং সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির মন্তব্যের পাল্টা জবাবে বলেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ। পরমাণু বোমার ভয়ে সেই অধিকার ভারত ছেড়ে দেবে না। মোদীজি প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফিরলে পাকিস্তানের গুলির জবাব ভারত কামানের গোলা দিয়ে দেবে।’’