(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (ডান দিকে)। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের বৈঠক চলছে আমেরিকায়। সেই বৈঠকে যোগ দিতে নিউ ইউর্কে গিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করলেন তিনি। বাংলাদেশের মুখ্য উপদেষ্টা অফিসের বিবৃতি অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক সফল। বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন করবেন, ইউনূসকে এমনই আশ্বাস দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বিবৃতি অনুযায়ী, কী ভাবে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পূর্ববর্তী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন সেই বিবরণ বাইডেনকে জানিয়েছেন ইউনূস। এ ছাড়াও, বাংলাদেশের পুনর্গঠনের জন্য পুলিশের গুলির সামনে পড়ুয়ারা কী ভাবে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, কত প্রাণ গিয়েছে— এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বাইডেন এবং ইউনূসের। সব শুনে বাইডেন ইউনূসকে জানান, শিক্ষার্থীরা যদি দেশের জন্য এতটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তবে তাঁদেরও (আমেরিকার সরকার) কিছু করা উচিত। ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাঁর সরকার সাফল্য পাবেই। মুখ্য উপদেষ্টা অফিসের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, বাইডেন নতুন সরকারকে সব রকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকের ফাঁকে আরও অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউনূস। বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল অশান্তি এবং হিংসার আবহে গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাসিনা। এর পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে একাংশের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, আমেরিকার কথা মতো বঙ্গোপসাগরে একাধিপত্য বাড়াতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাদের হাতে তুলে না দেওয়ার মাসুল হিসাবেই হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাইডেন সরকার। তাদের স্পষ্ট বার্তা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলে আমেরিকার কোনও হাত নেই।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাই মাস থেকে যে অশান্তি ও হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে তা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। প্রথম থেকেই আমেরিকা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রথম বাইডেনের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল ইউনূসের।