Israel-Iran Conflict

হানিয়াকে খুন করতে গেস্ট হাউসে বোমা বসিয়েছিল মোসাদের ইরানি এজেন্টরা! দাবি ব্রিটিশ সংবাদপত্রে

ইরান প্রশাসনের অন্দরে ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থার ‘জাল’ কতটা বিস্তৃত, মঙ্গলবার তেহরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার খুনের ঘটনা তারই প্রমাণ বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ১৪:৫৬
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে খুন করতে ইরানি এজেন্টদেরই ব্যবহার করেছে ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে শনিবার এই দাবি করা হয়েছে। দাবির সমর্থনে একটি ভিডিয়ো ফুটেজও প্রকাশ করেছে তারা।

Advertisement

ওই প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, গত মে মাসে কপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির শেষকৃত্যের সময়ই হানিয়াকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুন করার পরিকল্পনা ছিল ইজ়রায়েলের কিন্তু তাতে বহু সাধারণ মানুষ হতাহত হতে পারেন আশঙ্কা করে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছিল। টেলিগ্রাফে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, হানিয়া অতিথিশালার যে অংশে ছিলেন, তার তিনটি কক্ষে বোমা বসানো হয়েছিল। আর সেই কাজ করেছিলেন মোসাদেরই দুই ইরানি এজেন্ট।

প্রকাশিত ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, দুই ব্যক্তি একটি ভবনের ভিতর কয়েকটি ঘরে ঘন ঘন ঢুকছেন। তাঁরা ইরান সেনার আনসার-আল-মাহদি বাহিনীর সদস্য হতে পারেন বলে জানিয়েছে টেলিগ্রাফ। ওই বাহিনীই ইরান সরকার রাষ্ট্রীয় অতিথিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, সেই বাহিনীর দুই সদস্যই সম্ভবত মোসাদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন। তাঁদের বসানো বোমা পরে দূর নিয়ন্ত্রকের সাহায্যে ফাটানো হয়েছিল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার তেহরানে গিয়ে গেস্ট হাউসের যে অংশে হানিয়া ছিলেন, সেখানেই বসানো হয়েছিল বোমাটি। গভীর রাতে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে শুক্রবার জানিয়েছিল আমেরিকার সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস। তারা জানিয়েছিল, অন্তত দু’মাস আগে দূর নিয়ন্ত্রক বোমা বসিয়েছিল ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ! ইরানের রাজধানী তেহরানের সেই গেস্ট হাউসে মঙ্গলবার জীবনের শেষ রাত কাটিয়েছিলেন হানিয়া!

ইরান সেনার এলিট ‘রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর কয়েক জন আধিকারিকের সূত্র উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান প্রশাসনের অন্দরে ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থার ‘জাল’ কতটা বিস্তৃত, মঙ্গলবারের ঘটনা তারই প্রমাণ। ‘রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর দু’জন আধিকারিক জানিয়েছেন, হানিয়া ওই ভবনের যে অংশে ছিলেন, বিস্ফোরণের অভিঘাতে তার জানলা এবং একটি দেওয়ালের অংশ ধসে পড়েছে। কিন্তু মূল ভবনটি অক্ষত রয়েছে। যার অর্থ, সেখানে বাইরে থেকে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানেনি।

হানিয়ার খুনের বদলা নিতে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ‘সরাসরি সামরিক প্রত্যাঘাতে’র নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আমি খোমেইনি। তাঁর ওই ‘বার্তা’য় সক্রিয় হয়েছে ইরানের জাতীয় সামরিক পরিষদ। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার পশ্চিম এশিয়ায় আরও যুদ্ধজাহাজ এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। পেন্টাগনের তরফে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement