গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বেহাল ১২০০ কোটি খরচ করে তৈরি নতুন সংসদ ভবনের দশা। এ বার আর ছাদ থেকে চুঁইয়ে জল পড়া নয়, সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সংসদ ভবনের মেঝেতে জলের ধারাস্রোত বয়ে চলার ভিডিয়ো (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে হিন্দিতে কাউকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘ইয়ে হ্যায় হমারে রাজ্যসভা!’’ অর্থাৎ, এই হল আমাদের রাজ্যসভা। যা থেকে অনেকেই অনুমান করছেন, ওই জলস্রোত বইছে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা চত্বরে।
বছর ঘোরার আগেই কেন বৃষ্টির জলে থৈ থৈ নতুন সংসদ ভবন? লোকসভা সচিবালয়ের তরফে শুক্রবার তার এক ‘অভিনব’ ব্যাখ্যা মিলেছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, নতুন সংসদ ভবনে কাচের গম্বুজ (ডোম) থেকেই ওই বিপত্তি! যে আঠালো পদার্থ ব্যবহার করে গম্বুজের কাচ জোড়া হয়েছিল, তার ফাঁক থেকে জল চুঁইয়েই এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠেছে যে, গম্বুজের ফাঁকফোকর থেকে চুঁইয়ে আসা জলের ধারা কী ভাবে সংসদ ভবনের মেঝে ভাসিয়ে দিতে পারে!
গত বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মণিকম ঠাকুর সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছিল, সংসদের লবিতে ছাদ থেকে সমানে চুঁইয়ে পড়ছে জল। মেঝেতেও সর্বত্র জল থইথই! পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও মতে বালতি দিয়ে সেই জল ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু নতুন ভিডিয়ো দেখাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। ভবনের মেঝেই এখন স্রোতস্বিনী!
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৮ মে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেপ্টেম্বর থেকে অধিবেশনের সূচনা হয় সেখানে। অর্থাৎ, বছর ঘোরার আগেই মাঝ বর্ষায় বিপত্তির মুখে পড়েছে সংসদ ভবন। একই ভাবে মোদীর উদ্বোধন করা অযোধ্যার রামমন্দিরও বর্ষার গোড়ায় বিপত্তির শিকার হয়েছিল। প্রথম বৃষ্টিতেই রামলালার গর্ভগৃহের ছাদ থেকে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়তে শুরু করেছে বলে রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস স্বয়ং অভিযোগ তোলেন। সে সময় কেন্দ্রীয় সরকারের গড়া ‘অযোধ্যা শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট’-এর মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘রামমন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে মানের সঙ্গে কোনও আপস করা হয়নি। কিন্তু মন্দিরের বিদ্যুতের লাইনগুলি বেয়ে জল ভিতরে চলে আসছে। সেটাই চুঁইয়ে পড়ছে।’’