গাজ়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ইজ়রায়েলের হামলায়। —ফাইল চিত্র।
গাজ়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ইজ়রায়েলের হামলায়। আকাশপথে ইজ়রায়েলি ফৌজ বোমা ফেলেছে বলে অভিযোগ। শনিবার হামাসের সশস্ত্র সংগঠন থেকে জানানো হয়েছে, ইজ়রায়েলের বিমান হামলায় ৬০ জনেরও বেশি যুদ্ধবন্দি নিখোঁজ এবং ২৩ জনের প্রাণ গিয়েছে।
হামাসের আল-কাশাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবর উবাইদা তাঁর টেলিগ্রামে জানান, এই হামলায় ২৩ জনের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়ে আছে। এখনও পর্যন্ত তাঁদের দেহগুলি ধ্বংসস্তূপ থেকে বার করা যায়নি। তিনি বলেন, “গাজ়ায় ইজ়রায়েলের হামলা ক্রমাগত নৃশংস হয়ে উঠেছে।” প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট জানান, তিনি গত দু’দিনে উত্তর এবং দক্ষিণ সীমান্তে সফর করেছেন। সেখানে তাঁকে সেনারা বলেছেন যে তাঁরা ইজ়রায়েলি সেনাদের কাছে পরাজয় হতে অনিচ্ছুক। তাঁরা সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকবে।
এর আগে, গাজ়ায় অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। আকাশপথে অ্যাম্বুল্যান্স লক্ষ্য করে ইজ়রায়েলি ফৌজ বোমা ফেলেছিল। প্যালেস্তিনীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ওই হামলায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০-এর কাছাকাছি।
গাজ়ায় ক্রমেই ভয়াবহ যুদ্ধে জড়াচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইজ়রায়েলি সেনা। ইতিমধ্যে ইজ়রায়েলি সেনার হামলায় গাজ়ায় মারা গিয়েছেন অন্তত আট হাজার জন। যার মধ্যে অনেকেই শিশু। মঙ্গলবার গাজ়ার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ায় ইজ়রায়েল যে রকেট হামলা চালিয়েছিল, তাতে ১৯৫ জন প্যালেস্তিনীয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে হামাস। এই প্রসঙ্গে অবশ্য ইজ়রায়েলের দাবি, প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠনটির ঘাঁটি লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। ইজ়রায়েল এ-ও দাবি করেছে যে, তাদের হামলায় হামাসের দুই কম্যান্ডার নিহত হয়েছেন। যদিও হামাসের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামাসের ‘হামলা’ এবং গাজ়ায় ইজ়রায়েলি ‘প্রত্যাঘাতে’র পর যে সংঘাতের সূচনা হয়েছিল, তাতে দু’পক্ষেরই হতাহতের সংখ্যা প্রচুর। জানা গিয়েছে, ইজ়রায়েল তো বটেই বিভিন্ন দেশের মোট ২৩০ জন নাগরিককে আটকে রেখেছে হামাস। মূলত দর কষাকষির জায়গায় সুবিধা পেতেই ওই বন্দিদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এই আবহেই একটি টেলিভশন-বক্তৃতায় হামাসের অন্যতম মুখপাত্র আবু ওবেইদা বলেন, “আমরা অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই কিছু বিদেশিকে ছেড়ে দিতে চাই। আমরা এই বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছি।”
এর আগে মোট পাঁচ জন পণবন্দিকে ছেড়েছিল হামাস। এদের মধ্যে চার জনকে কূটনৈতিক মাধ্যমে আলাপ আলোচনার পর ছাড়া হয়। আর এক জনকে উদ্ধার করে ইজ়রায়েলি সেনা। তেল আভিভের তরফে আগেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে, বন্দিদের মুক্ত করার বিষয়ে তারা হামাসের উপর সামরিক এবং কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়ে যেতে থাকবে।