Myanmar Disturbance

চিনা বন্দরের কাছে গিয়েই আরাকান আর্মি থমকে গেল! মায়ানমারে বেজিং বিদ্রোহীদের দিকে ঝুঁকল?

গত ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছিল বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৬
Share:

দেড় মাসের ধারাবাহিক হামলায় মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই প্রদেশের কিয়াউকফিউতে কোনও হামলা চালায়নি তারা। উপকূলবর্তী ওই অঞ্চলে মায়ানমারের সামরিক জুন্টার সঙ্গে যৌথ ভাবে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ (এসইজেড) এবং গভীর সমুদ্র বন্দরে গড়ে তোলার কাজ চালাচ্ছে চিন।

Advertisement

জুন্টা সরকারের বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রী কান জাও দাবি করেছেন, কিয়াউকফিউতে জুন্টা ফৌজের ঘেরাটোপে নিরুপদ্রবে কাজ চালাচ্ছে চিনা ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাগুলি। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে, জুন্টা সরকার পরিচালিত সংস্থা ‘কিয়াউকফিউ এসইজেড কনসোর্টিয়াম’ এবং চিনা সংস্থা সিআইটিআইসির যৌথ উদ্যোগে নির্মীয়মাণ ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং গভীর সমুদ্র বন্দরে কোনও হামলা চালানো হয়নি।

গত দেড় বছরের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই ঘটনা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এই ঘটনায় বিদ্রোহীদের একাংশের সঙ্গে চিনের যোগাযোগ স্পষ্ট। কিয়াউকফিউ সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমেই ভারত মহাসাগরের সঙ্গে বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরি করতে সক্রিয় চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার। এই বন্দর ১৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চিন-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরে’র অন্যতম অংশ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছিল বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। রাখাইন প্রদেশের সঙ্গেই রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’।

পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানোও শুরু করে দিয়েছে। প্রাথমিক পর্বে বিদ্রোহীদের দমনে জুন্টা ফৌজকে সামরিক সহায়তা করেছিল বেজিং। পরবর্তী সময় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাও করেছিল জিনপিং সরকার। কিন্তু সেই উদ্যোগ সফল হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement