বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কথা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ঢাকার শহিদ মিনার থেকে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবেন। কিন্তু তা হল না। রাতারাতি বদলে গেল কর্মসূচি। একই সমাবেশ স্থল। শুধু কর্মসূচি পরিবর্তন করে ভিন্ন আয়োজন। নতুন কর্মসূচি ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ বা ঐক্যের যাত্রা। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা জমায়েত করেন শহিদ মিনারে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে সোমবার রাত ২টোর কিছু আগে কর্মসূচি বদলের কথা ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব। সোমবার রাতেই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, গণ অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপের পরেই নিজেদের কর্মসূচি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব। ইউনূসের প্রশাসন ঘোষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার কারণে আলাদা করে ঘোষণাপত্র প্রকাশের পথ থেকে পিছিয়ে আসেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বিকেলের সমাবেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে ইউনূসের প্রশাসনকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। বস্তুত, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়েছে। ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই ‘ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ কর্মসূচি থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, এটি পুরোটাই বেসরকারি একটি কর্মসূচি। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।
তবে সোমবার রাতে এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকের পরে রাত ১টা ৪৫মিনিট নাগাদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে ঘোষণাপত্র প্রকাশের কর্মসূচি বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।