ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়া। —ফাইল চিত্র।
ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়াকে ঘিরে প্রতিটি পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার বিকেলে এ কথা জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। খুনের মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ইয়েমেনের আদালত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “সরকারের তরফে যত রকম ভাবে সম্ভব সাহায্য করা হচ্ছে। এখান থেকে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়, সে দিকে আমরা নজর রাখব।”
ইয়েমেনের এক নাগরিককে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ৩৭ বছরের নিমিশা এখন সে দেশের জেলে বন্দি রয়েছেন। গত সোমবার তাঁর মৃত্যুদণ্ডে সিলমোহর দেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি। সেই থেকে আলোচনার কেন্দ্রে ইয়েমেন অভিবাসী কেরলের তরুণী। এক মাসের মধ্যে নিমিশার সাজা কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছে সে দেশের আদালত। মেয়ের প্রাণ বাঁচানোর জন্য কেন্দ্র এবং কেরল সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন নিমিশার মা। তিনিও ইয়েমেনেই রয়েছেন। কেন্দ্রের তরফেও ইতিমধ্যে পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
নিমিশা কেরলের পালাক্কড় জেলার কোল্লেনগোড়ের বাসিন্দা। ইয়েমেনে নার্সের কাজ করতেন। অভিযোগ, তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী তালাল আবদো মাহদিকে অতিরিক্ত পরিমাণ ঘুমের ওষুধের ইনজেকশন দিয়েছিলেন নিমিশা। তাতেই মৃত্যু হয় ইয়েমেনের ওই নাগরিকের। তালালের কাছে পাসপোর্ট ছিল নিমিশার। সেই পাসপোর্ট উদ্ধার করতেই এই কাণ্ড নিমিশা ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। ২০২০ সালে নিম্ন আদালত ফাঁসির সাজা দেয় নিমিশাকে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেই সাজা বহাল রাখে ইয়েমেনের সর্বোচ্চ আদালত। দিন কয়েক আগে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমিও নিমিশার সেই সাজা বহাল রাখেন।
নিমিশার মৃত্যুদণ্ড বিতর্কে সব রকম ভাবে সম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে ইরান। দিল্লিতে ইরান দূতাবাসের এক শীর্ষ আধিকারিক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি দেখব। সম্ভবত তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চার্জ রয়েছে। মানবাধিকার ক্ষেত্রে এই নিয়ে যা করা সম্ভব, আমরা করব।’’ ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি জেলে বন্দি রয়েছেন নিমিশা। এই শহরটিতে ইরান সমর্থিত হুথিদের প্রভাব রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেই হিসাবেই ভারতকে নিমিশার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে ইরান।