বিতর্ক ছায়া হয়ে উঠেছে প্রিয়ঙ্কার। ফাইল চিত্র
ভবানীপুরে প্রচারে বেরিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন বিজেপিপ্রার্থী প্রিয়ঙ্কা তিবরেওয়াল। আর শুক্রবার সকালে তাঁকে ভবানীপুরে দেখাই গেল না। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ফোন করা হলে প্রিয়ঙ্কার সহকারী সৌরভ দাস জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য সকালের দিকটা প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে। সকালে যে কর্মসূচি ছিল সেটাই বিকেলে হতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যেইসৌরভ ফোন করে জানান, প্রচার বন্ধ নয়। আজ দিদি (প্রিয়ঙ্কা) এমন একটা জায়গায় প্রাচর করছেন তা তিনি কাউকেই জানাতে চান না। পরে এক বিজেপি নেতাও জানান, শুক্রবার সকালের প্রচার কর্মসূচি গোপন রাখা হবে বলে দলই ঠিক করেছে। কিন্তু কেন এই গোপনীয়তা? তার জবাব পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য বিজেপি-র তরফে জানানো হয়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ভবানীপুরের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে থাকবেন প্রিয়ঙ্কা।কিন্তু স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রিয়ঙ্কার আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তাঁদের বক্তব্য, পরপর দু’দিন প্রচারে বেরিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার কারণে দলের তরফে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীকে প্রচারে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়ে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারে প্রচারে গিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েন প্রিয়াঙ্কা। দেবেন্দ্র ঘোষ রোডে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগের সময়ে তাঁকে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে স্লোগান দেন স্থানীয়রা। ‘ঘরের মেয়ে’স্লোগান তোলার পাশাপাশি তাঁকে ‘বাচ্চা মেয়ে’ বলে আক্রমণ করা হয়। সেই শুনে মেজাজ হারাতে দেখা যায় প্রিয়ঙ্কাকে। সেই সময় তিনি বলে ওঠেন, “বাচ্চা মেয়ে হলে এত ভয় কেন?” পরদিন বৃহস্পতিবার বচসা বাধে তাঁরই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে। সাধারণ পোশাকে থাকা পুলিশকর্মীরা কেন উর্দি পরেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিজেপি-র বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মাত্র ৪ জন সঙ্গী নিয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কোভিডবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা যায়, তার জন্যই ভোটপ্রচারের সময় সাদা পোশাকের পুলিশ ভিড় জমাচ্ছে। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন সে সংক্রান্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য শাসকদলের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই পুলিশ এই কাজ করছে বলেও দাবি প্রিয়ঙ্কার। তাঁর পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে বিতর্ক অবশ্য তৈরি হয়েছে আরও আগে থেকেই। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে ধুনুচি নাচ ও বড় জমায়েতের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যদিও তা নিয়ে প্রিয়ঙ্কা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ওই রকম চিঠি একশো পাই, দেড়শো পড়ি, দু’শো ছিঁড়ি।’’ এ সব বিতর্ক তৈরির জেরেই কি প্রিয়ঙ্কা আপাতত আড়ালে? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি রাজ্য বিজেপি-র একাধিক নেতা।
মোদীর জন্মদিন থেকে বিজেপি একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে। মনে করা হয়েছিল, ভিআইপি আসন ভবানীপুর উপনির্বাচনেও তার প্রভাব পড়বে। কিন্তু মোদীপক্ষের প্রথম দিনেই ছুটির মুডে ভবানীপুর বিজেপি।