২০১৪ সালে বিজেপি-তে যোগ দেন প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। ফাইল চিত্র
রাজনীতিতে জয়ই সব কথা বলে না। এই কথাটা প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের ক্ষেত্রে সত্যি। দু’বার নির্বাচনে পরাজিত হয়েও তিনি তারকা কেন্দ্র ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী। গত বিধানসভা নির্বাচনে অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ ছিলেন এই কেন্দ্রের পদ্মের প্রার্থী। এ বারও তিনি চেয়েছিলেন দাঁড়াতে। কিন্তু অনেক ধোঁয়াশার শেষে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তিনিই দলের তাস।
প্রিয়ঙ্কা বিজেপি-তে কিন্তু খুব পুরনো নন। তিনি যোগ দিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। সেটাও লোকসভা নির্বাচনের পরে। প্রথম দিকে প্রিয়ঙ্কার পরিচয় ছিল আসানসোলের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র আইনজীবী হিসেবে। কিন্তু পরবর্তী কালে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং এখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভরসার পাত্রী হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে বিজেপি-তে যোগ দিয়েই ২০১৫-র কলকতাতা পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে। পরাজিত হন।
ভোটে হারলেও ৪০ বছরের প্রিয়ঙ্কা রাজনীতিতে নেমে আর ঘরে ঢুকে পরেননি। ধীরে ধীরে দলে নিজের জায়গা তৈরি করতে থাকেন। ১৯৮১ সালে জন্মানো প্রিয়ঙ্কা কলকাতার ওয়েল্যান্ড গোলস্মিথ স্কুলে লেখাপড়া করেন। এর পরে দিল্লি থেকে স্নাতক এবং হাজরা লকলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক হন। এর পরে মানবসম্পদ বিষয়ে এমবিএ করেন তাইল্যান্ড অ্যাসামপশন ইউনিভার্সিটি থেকে।
বাংলা তো বটেই সেই সঙ্গে হিন্দি ও ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ প্রিয়ঙ্কাকে একটা সময়ে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিজেপি-র মুখ হিসেবেও দেখা যায়। দলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান ২০২০ সালের অগস্টে। যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি প্রিয়ঙ্কা গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন এন্টালি আসনে। কিন্তু তৃণমূলের কাছে হারতে হয় প্রায় ৫৯ হাজার ভোটে।
দু’বার হেরেছেন। এ বার লড়াই আরও কঠিন। বিপরীতে প্রার্থী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি অবশ্য দাবি করে, ভোটে দু’বার হারলেও সদ্যই দলকে বড় জয় এনে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাই। গত ১৯ অগস্ট ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, খুন, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের তদন্ত করবে সিট। এই মামলায় বিজেপি-র পক্ষে আইনজীবীদের প্রধান মুখই ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। বিজেপি শিবির তখন থেকেই প্রিয়ঙ্কাকে ‘লড়াকু’ আখ্যা দিতে শুরু করে। এ বার মমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সুযোগ করে দেওয়াটা দলের পক্ষে পুরস্কার বলেই মনে করছে রাজ্য বিজেপি।