মদন মিত্র এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটের দিন ‘স্টেরয়েড’, ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ যা লাগে তাই দেওয়া হবে। বিজেপি যেভাবে চায় সেভাবেই খেলা হবে। বিজেপি-তে যোগ দেওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ডোমজুড়ে এসে এই ভাষাতেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। অন্যদিকে, রাজীব বুধবার হুগলির শ্রীরামপুরে ‘খেলা হবে’ স্লোগান প্রসঙ্গে বিঁধেছেন তৃণমূলকে।
বুধবার ডোমজুড়ের নিবরা এলাকায় প্রচারে এসেছিলেন মদন। তৃণমূলের বাইক রালিতে অংশ নেন। মদন বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্মান দিয়েছিল। আর বিজেপি তাকে ছিবড়ে করে দেবে।’’ সম্প্রতি জনসভায় রাজীব বলেছিলেন, তিনিও খেলা জানেন। উত্তরে মদন বুধবার বলেন, ‘‘রাজীব সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতেছিলেন। তা হলে উনি বলতে পারবেন কী খেলা খেলেছেন।’’ সেই সঙ্গে মদনের দাবি, তিনি শুনেছেন রাজীব ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। আর তিনি নিজে ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন। তিনি চু কিতকিত, কবাডি খেলা জানেন। কখন পা ধরে টানতে হয়, তা-ও জানেন।
মদন বলেন, ‘‘যে রোগের যে ওষুধ। বিধানসভা ভোটের দিনে যদি অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েড লাগে, তা হলে সেগুলি প্রয়োগ করা হবে। রাজীবের লজ্জা হওয়া উচিত, যে ভাবে ‘গোলি মার’, ‘জয় শ্রীরাম’ বলছেন।’’ এরপর মদন রবীন্দ্রসংগীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গেয়ে ওঠেন।
‘খেলা হবে’ কথার মাধ্যমে একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বলে বুধবার শ্রীরামপুরে বলেন রাজীব। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনীতিটা খেলার ব্যাপার নয়। রাজনীতি একটা সিরিয়াস ব্যাপার। আমরা মনে করি রাজনীতি হল মানুষের স্বার্থে মানুষের উন্নয়নের জন্য। ‘খেলা হবে’ মানে কি রক্তের হোলি খেলার কথা বলছেন? মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেব না, এমন খেলা খেলবেন বলছেন! আমরা বিগত পঞ্চায়েত ভোট দেখেছিলাম। যে ভাবে নির্বাচন হয়েছিল, সেটাকে নির্বাচন বলা যায় না, প্রহসন বলা যায়। ‘খেলা হবে’ মানে মারাত্মক কথা। আর আজকে যারা বলে গিয়েছেন যে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে, তা আরো মারাত্মক। ২০১৬ সালে আমার জয় নিয়ে কেউ একটা কথা তুলতে পারেনি। আজকে তারা হেরে যাবে বলেই ‘খেলা হবে’ বলতে হচ্ছে। এটা তাদের নৈতিক পরাজয়।’’
রাজীব আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভোটে জেতাটা আমার কাছে কাল হয়েছিল। আমার জীবনে মানুষের আশীর্বাদটা তৃণমূলের কাছে অভিশাপ হয়েছিল। বাঁকা চোখে দেখেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। মানুষের রায়কে যারা খেলা বলছে, আগামী দিনে তাদের খেলা ডোমজুরের মানুষ দেখিয়ে দেবে।’’ রাজীবের অভিযোগ ‘খেলা হবে’র মধ্যে দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল বুঝে গিয়েছে তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার লুট করতে চাইছে।