ইমরান খান এবং গোতাবায়া রাজাপক্ষে। ফাইল চিত্র।
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তৃতার পূর্বঘোষিত অনুষ্ঠান বাতিল করল শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্ট। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ইমরানের বক্তৃতার কথা জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিদেশ দফতর। কিন্তু বুধবার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা অভয়বর্ধন বলেন, ‘‘বিশেষ কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্টে বক্তৃতা বাতিল করা হয়েছে।’’
সরকারি ভাবে শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণেই ইমরানের বক্তৃতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বুধবার কলম্বোয় সর্বদল বৈঠকের পর রাজনৈতিক মহলের খবর, পার্লামেন্টের বক্তৃতায় ইমরান কাশ্মীর সমস্যার প্রসঙ্গ তুলতে পারেন আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার।
সর্বদল বৈঠকে হাজির এক রাজনৈতিক নেতা বুধবার বিকেলে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘পার্লামেন্টে ইমরান বক্তৃতা করলে, কাশ্মীর প্রসঙ্গের অবতারণা করতে পারেন বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’
ঘটনাচক্রে, গত সপ্তাহেই দিল্লি সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছিলেন গোতাবায়ার দাদা তথা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাস দমনে দ্বিপাক্ষিক পদক্ষেপের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক আর্থিক, বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ নিবিড় করার কথা বলা হয়েছিল।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন ইমরান। পার্লামেন্টের বক্তৃতা বাতিল হলেও গোতাবায়া, মাহিন্দা-সহ রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কর্মসূচি অপরিবর্তিত রয়েছে বলে শ্রীলঙ্কা সরকার জানিয়েছে। সফরের এক সপ্তাহ আগে এই বক্তৃতা বাতিলের পদক্ষেপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
গত নভেম্বরে ‘চিন ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরেই কলম্বোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্রিয় হয়েছিল নয়াদিল্লি। গত সপ্তাহে মাহিন্দার সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রীলঙ্কার ২০১৯-এর ইস্টার ডে-তে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছিলেন মোদী। প্রসঙ্গত, ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস এবং ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতকে ইস্টার সন্ত্রাসের জন্য প্রকাশ্যেই দায়ী করেছিল রাজাপক্ষে সরকার।