নতুন করে তৈরি হওয়া সার্চ কমিটিতে রাজ্যের ২ জন প্রতিনিধি থাকা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে শিক্ষামহলের একাংশ। ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটিতে বদল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সার্চ কমিটিতে এখন থেকে ৩ জনের পরিবর্তে ৫ সদস্য থাকতে পারেন। সঙ্গে ফিরিয়ে আনা হতে পারে ইউজিসির প্রতিনিধিত্বও। রাজ্যের তরফে ১ জনের পরিবর্তে থাকতে পারেন ২ জন প্রতিনিধি। রাজ্যপাল এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বা সেনেট মনোনীত ১ জন করে প্রতিনিধি থাকবেন এই সার্চ কমিটিতে। জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল পদে থাকার সময় নানা ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল রাজভবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে জোর দ্বন্দ্ব হয়েছিল। অনেকে মনে করছেন, সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত এড়াতেই সাবধানী পদক্ষেপ করছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
নতুন করে তৈরি হওয়া সার্চ কমিটিতে রাজ্যের ২ জন প্রতিনিধি থাকা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে শিক্ষামহলের একাংশ। কারণ, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাজকর্মে নজরদারির জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার রাজ্যপালের এই হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না বলেই মনে করছে শিক্ষামহলের একাংশ। তাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সেই চিঠি প্রত্যাহারের জন্য রাজ্যপালকে আর্জি জানিয়েছেন। সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতে কৌশল অবলম্বন করে সার্চ কমিটিতে ২ জন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
কারণ উপাচার্য ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে যদি শিক্ষা দফতরের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তা হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের মতামত গুরুত্ব পাবে কমিটির ভোটাভুটিতেই। উচ্চশিক্ষা দফতর এবং উচ্চশিক্ষা সংসদের ২ জন সদস্যকে সার্চ কমিটিতে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। সে দু’টি ক্ষেত্রেই কোনও সদস্যকে সার্চ কমিটিতে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর হাতে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়েই নিজেদের মর্জিমাফিক উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবে। আগামী ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের সেই সংশোধনী প্রস্তাব আকারে পেশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সার্চ কমিটিতে বদল আনা হয়েছিল। সে বার আইন সংশোধন করে সার্চ কমিটি থেকে ইউজিসির মনোনীত প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। বদলে যুক্ত করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের একজন প্রতিনিধিকে। কিন্তু নতুন ৫ জনের কমিটিতে আবারও ফিরিয়ে আনা হতে পারে ইউজিসির প্রতিনিধিকে। ইউজিসির সঙ্গে অনুদান সম্পর্কিত বিবাদের জেরে সার্চ কমিটিতে সেই সংস্থার প্রতিনিধিত্ব বাদ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে তা নিয়ে আইনি জটিলতা হওয়ার কারণে সেই নিয়মও আবার ফিরিয়ে আনা হতে পারে বলেই শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর।