মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রকল্প প্রসঙ্গে কথা হয় পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটকের। ফাইল চিত্র।
মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভায় পূর্ত দফতরের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি কাজের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর)-এ মাত্রাতিরিক্ত খরচ দেখানো নিয়েই মূলত কূপিত হন তিনি। বৃহস্পতিবার পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক দাবি করলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মেদিনীপুরে মমতা বলেছিলেন,‘‘পিডব্লিউডির খাঁই কত? আমি যেন কাজ করাই না! কালীঘাট মোড়ে অতবড় গেট করে দিয়েছি ৫০ লক্ষ টাকায়। এত টাকা তো লাগেনি।’’ তিনি নির্দেশ দেন, ‘‘ওই ডিপিআর কেটে ফেলে দাও। কী ডিপিআর তৈরি করেছে আমাকে দেখিও তো! এখন তো কত হালকার উপর কাজ হয়। কিন্তু এমন খরচ দেখাচ্ছে যেন, খোদাই করে কাজ হবে। কলকাতায় তো এত কিছুর নির্মাণ হয়, তাতে তো এত খরচ হয় না।’’
একই সঙ্গে ক্ষোভের সুরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, প্রয়োজনে হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট ও এইচআরবিসি-র ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তারপরেই পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক যোগাযোগ করেন তাঁর দফতরের সচিবের সঙ্গে। জানতে চান, বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের অবস্থান কী? সূত্রের খবর, দফতর থেকে মন্ত্রীকে জানানো হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রাম বীরসিংহে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়তে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ার দায়িত্বে রয়েছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। তারাই উদ্যোগী হয়ে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে ডিপিআর তৈরি করিয়েছে। যেখানে ওই প্রকল্প নির্মাণে ১৮ কোটি টাকার কিছু বেশি খরচ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ওই ডিপিআরের দায়িত্ব তাদের নয়। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকল্প প্রসঙ্গে ভুল বোঝানো হয়েছিল। এমনটাই মন্ত্রীকে জানানো হয়।
ওই পর্যটন কেন্দ্রটি গড়তে পৃথক দু’টি গেট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ওই দু’টি গেট নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে। এই গেট নির্মাণ করতে মোট ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা খরচ হবে বলে ডিপিআর তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। বিষয়টি মন্ত্রীকে জানানোর পাশাপাশি, তাঁদের যুক্তির স্বপক্ষে কাগজপত্রও মন্ত্রীর কাছে পাঠান আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সেই তথ্য প্রমাণ হাতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী মলয়। পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ার দায়িত্ব পুরোপুরি তাঁদের হাতে নেই বলেও মন্ত্রী জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। দু’টি গেট পৃথক ভাবে নির্মাণ করতে যথাক্রমে ৭৪ ও ৭৬ লক্ষ টাকা করে খরচ হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।