স্কুল সম্পর্কে সব তথ্য পাবেন অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা আইনি জটিলতার মধ্যেই অভিভাবকদের হাতে বড়সড় ‘অস্ত্র’ এল স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্কুলের প্রশাসন কেমন চলছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এ বার জানতে পারবেন অভিবাবকরা। তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) সেই অধিকার দেওয়া হল অভিভাবকদের।
সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা কমিশনার। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও স্কুলের ভবন নির্মাণের খরচ থেকে শিক্ষকদের হাজিরা-সহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্য জানার অধিকার আইন মারফত আবেদন করলেই তা জানাতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। শিক্ষক সংগঠনগুলির মতে, নতুন এই নির্দেশিকার ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা। কারণ, স্কুল পরিচালনা প্রসঙ্গে অভিভাবকদের অভিযোগ থাকলেও, এত দিন তা পাত্তা দিতেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। নতুন এই নির্দেশিকার ফলে অভিভাবকদের হাতে বড়সড় ‘অস্ত্র’ এল।
নতুন এই নির্দেশিকার ফলে স্কুল পরিচালন কমিটির বৈঠকের মিনিটসের তথ্য হাতে পাওয়া সম্ভব হবে অভিভাবকদের পক্ষে। সঙ্গে আয়-ব্যয়ের হিসাব, স্কুলের শূন্যপদ, শিক্ষকদের হাজিরার মতো বিষয়গুলিও তাঁদের জানাতে বাধ্য থাকবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, কোনও স্কুলে কত শূন্যপদ রয়েছে, তা-ও জানতে পারবেন তাঁরা। শিক্ষক সংগঠনের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই নির্দেশের ফলে কেবল যে অভিভাবকরা উপকৃত হবেন এমনটা নয়, বিভিন্ন স্কুলে বদলি নিতে চাওয়া শিক্ষকরাও নতুন এই নির্দেশ মারফত যাবতীয় তথ্য হাতে পেয়ে যাবেন। ফলে বদলি নিতে চাইলে, সেই মতো পরিকল্পনা করতে পারবেন। কোনও স্কুলের শূন্যপদ আর চেপে রাখতে পারবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।’’
এই নির্দেশিকায় একটি ত্রুটি চোখে পড়েছে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সমিতির। সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘তথ্য জানার অধিকার আইনে স্কুলের তরফে যাঁরা এই তথ্য জানাবেন, তাঁরা হলেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও টিচার ইন চার্জ। অথচ স্কুল পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব থাকে প্রধান শিক্ষকের ওপর। এখন প্রশ্ন, প্রধান শিক্ষককে এড়িয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক বা টিচার ইনচার্জ কি যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এড়িয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক বা টিচার ইনচার্জকে এই দায়িত্ব দেওয়া স্কুল পরিচালন রুলের পরিপন্থী। সেই বিষয়টিও ভেবে দেখা দরকার।’’