তাপপ্রবাহের কারণে এগিয়ে আনা হতে পারে গরমের ছুটি। —ফাইল চিত্র।
আগামী সোমবার, ২২ এপ্রিল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে গরমের ছুটি শুরু হয়ে যাবে, আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যের গরমের পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার নবান্নে একটি বৈঠক হয়েছে। তার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত স্কুলের গরমের ছুটি সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি শিক্ষা দফতর।
সাধারণত রাজ্যের স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি শুরু হয় ৬ মে থেকে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা ক্রমে বাড়ছে। বুধবারও রাজ্যের ১৪টি এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়ে গিয়েছিল ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি। রবিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তীব্র দহনে স্কুলপড়ুয়াদের পক্ষে প্রতি দিন নিয়ম মেনে হাজিরা দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরাও। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে স্কুলে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বুধবার এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ২২ এপ্রিল থেকে স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যাবে।
শিক্ষা দফতর এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশিকায় ছুটির কথা জানায়নি। তবে মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকের নেতৃত্বে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, সেখানে স্কুলের গরমের ছুটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানেই ২২এপ্রিল থেকে গরমের ছুটি শুরু হওয়ার বিষয়ে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই গরমের কারণে স্কুলগুলিতে গ্রীষ্মের ছুটি এগিয়ে আনা হচ্ছে। তবে ২২ এপ্রিল থেকে এ বার ছুটি শুরু হলে নির্ধারিত সময়ের অন্তত ১৫ দিন আগে স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাবে। আবার কবে স্কুল খোলা যাবে, তা অনিশ্চিত। কারণ মে মাসেও গরমের দাপট চলতে পারে। গরমের ছুটির পর স্কুল খুললে পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পঠনপাঠন শেষ করানোর চাপ থাকবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সে ক্ষেত্রে, তখন স্কুলের সময় খানিকটা বাড়িয়ে দেওয়া হবে কি না, বিবেচনা করে দেখবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।
গরমের কারণে স্কুল বন্ধ রাখার আবেদন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। শিক্ষামন্ত্রীকে একটি ইমেল পাঠিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহ চলতে পারে। দাবদাহ কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই ২২ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার গরমের কারণে রাজ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকালে গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন এক মহিলা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার রাঘবপুর পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সেখ সাকিলা বিবি (৬২) অটোয় বসে সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আবার পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে দুপুরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় অলোকচন্দ্র কর্মকারের (৫২)। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদনে এই ঘটনাগুলির উল্লেখ করেছে শিক্ষক সংগঠন।