উদ্ধার হওয়া তিন জনকে নিয়ে গাড়িতে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে তৃণমূলের দুই পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। বুধবার বাঁকুড়ার ওন্দা থানার চূড়ামণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘অপহৃত’ এক পঞ্চায়েত সদস্যার পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে ওন্দা থানার পুলিশ। এর পর গভীর রাতে বিষ্ণুপুরে থাকা বিজেপির জেলা কার্যালয় থেকে দুই জয়ী প্রার্থী-সহ তিন জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া তিন জনকে বুধবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সদ্য শেষ হওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের চূড়ামণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল। তিনটি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। একটিতে জয় পায় সিপিএম। সামনেই বোর্ড গঠন। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্দনা রায় নামে এক জয়ী প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ ছাড়া বন্দনার স্বামী এবং সঞ্জয় মাণ্ডি নামে আরও এক তৃণমূল প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে দুই পঞ্চায়েত সদস্যের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশান ‘ট্র্যাক’ করে জানা যায় যে, তাঁরা রয়েছেন বিষ্ণুপুর শহরে থাকা বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে। এর পর ওন্দা থানার পুলিশ সেখানে হাজির হয়। উদ্ধার করা হয় তিন জনকে। এ নিয়ে তৃণমূলের ওন্দা ব্লক সভাপতি উত্তম কুমার বিট বলেন, ‘‘চূড়ামণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা যাতে বোর্ড গঠন করতে না পারি, সে জন্য চক্রান্ত চলছে। এ জন্যই তৃণমূলের দুই পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণ করে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে আটকে রেখেছিল বিজেপি। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপির ইচ্ছে ছিল সিপিএমের এক জন এবং তৃণমূলের দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে তারা ওই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করবে। আমরা বিষয়টি আমাদের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’
অন্য দিকে, তৃণমূলের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। ওন্দার বিধায়ক তথা বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, ‘‘ছাগলে কি না খায় আর পাগলে কি না বলে! যারা নিজেরাই ভোট লুট করল, সন্ত্রাস করল, ব্যালট খেয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তারাই আবার বিজেপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছে। এটা হাস্যকর।’’ কিন্তু কেন তিন জনকে বিজেপির কার্যালয়ে পাওয়া গেল? এ নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি তিনি।
এই ঘটনায় বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরা অপহরণের অভিযোগ পেয়েছিলাম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পঞ্চায়েত সদস্যকে উদ্ধার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’