কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতোর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎপর্ব নিয়ে কটাক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ‘বিক্রি’ হয়ে গিয়েছেন কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো। বুধবার বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে পিংবনীর সভা থেকে এমনই অভিযোগ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, তিনি কুড়মি সম্প্রদায় এবং জাকাত মাঝি পরগনার সদস্যদের ‘সাবধান’ করেছেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘আপনাদের টুপি পরানোর চেষ্টা করছেন। টুপি পরবেন না।’’
বুধবার পিংবনীতে যখন শুভেন্দু সভা করছেন, তখন সেখান থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে আদিবাসী দিবস উপলক্ষে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর এই সভা নিয়ে জোর টালবাহানা হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ওই সভা করছেন শুভেন্দু। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা। কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘উনি শুধু একা সভা করবেন। পশ্চিমবঙ্গ যেন ওঁর একার।’’ তিনি দাবি করেন, মমতাকে জঙ্গলমহলের রাস্তা তিনিই চিনিয়েছিলেন। সেটা ২০০৯ সালের ৯ অগস্ট। লালগড় রামকৃষ্ণ স্কুলের মাঠের সভায়। এর পর সরাসরি কুড়মি নেতা রাজেশকে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা চালানো এবং মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় যে কুড়মি নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন রাজেশ। আপাতত তিনি জামিনে মুক্ত। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম সফরে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক সঙ্গে ছবিও তোলেন। এ নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘আগে রাজেশকে ‘ক্রিমিনাল’ (অপরাধী) বলেছিলেন উনি। এখন সেই রাজেশের সঙ্গে…! আর রাজেশকেও বলিহারি। গিয়ে মমতার পায়ে পড়েছেন। তবে রাজেশ বিক্রি হতে পারে, কুড়মিরা বিক্রি হওয়ার লোক নয়। জনজাতির লোকজন বিক্রি হওয়ার নয়।’’ পরে আবারও শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজেশ মাহাতোকে কিনে নিয়েছেন।’’
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে রাজেশ বলেছিলেন, তাঁদের বেশ কিছু বিষয়ে কথা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে বেশ কয়েকটি বুথে নির্দল প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা কি তৃণমূলকে সমর্থন করছেন? এ নিয়ে রাজেশ বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলকে কুড়মি নির্দল প্রার্থীরা সহযোগিতা করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলির উদারতা থাকলে তারা কুড়মি প্রার্থীদের সমর্থন করুক।’’
শুভেন্দুর এই ‘অভিযোগ’ নিয়ে রাজেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিরোধী দলনেতার কথাবার্তা নিজে শুনে তবেই মন্তব্য করবেন তিনি। পরে রাজেশ বলেন, ‘‘মাইনলে (মানলে) শিব, নাহিলে (না হলে) পাথর...। শিরদাঁড়া বিক্রি নাই।’’
অন্য দিকে, শুভেন্দু মমতার সরকারের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক ভুয়ো এসসি-এসটি শংসাপত্র তৈরির অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ করেছেন, এই ভাবে সংরক্ষণের আওতায় অনেককে কাজও পাইয়ে দিয়েছে শাসকদল।