বেলডাঙায় সুভাষচন্দ্র বসু। বেলডাঙার একটি স্টুডিয়ো থেকে সংগ্রহ করেছেন সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।
যত দূর জানা যায়, ১৯২৯ সালের মার্চের পরে ১৯৩০ সালের মধ্যে সুভাষচন্দ্র জঙ্গিপুরে প্রথম এসেছিলেন। ১৯৩৭ সালে পুনরায় তিনি জঙ্গিপুরে আসেন। জঙ্গিপুর হাই স্কুলের কাছে রমণী মোহন স্মৃতি তোরণে মাল্যদান করেন সুভাষচন্দ্র। টানা রিকশায় তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল। সরস্বতী লাইব্রেরির দক্ষিণ দিকের বারান্দায় একটি সভাও হয়েছিল।
১৯২৯ সালে সুভাষচন্দ্র প্রথম জিয়াগঞ্জে আসেন। সে সময় জিয়াগঞ্জের ভট্টপাড়ার অধিকারি পরিবারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সভা হয় সিংহ বাহিনীর মন্দিরের সামনে তাজ বাহাদুরের হলে। ভট্টপাড়ার ব্রিজ ঘাটার মোড় থেকে আশপাশে রাস্তার ধার, বাড়ির মোড় কোথাও তিল ধারনের জায়গা ছিল না।
মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরে সুভাষচন্দ্র প্রথম এসেছিলেন লালবাগ দর্শনের সময়। পরে এক জন কারাবন্দি হিসেবে এসেছিলেন তিনি। সুভাষচন্দ্র কলকাতায় বন্দি হন ১৯২৩ সালে, বহরমপুর জেলে রাজবন্দি হিসেবে আসেন ১৯২৪ সালে। বহরমপুরে নতুন বাজারে দেবেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি। এখানে সুভাষচন্দ্র একাধিক বার অবস্থান ও রাত্রিযাপন করেন।
১৯৩২ সালে জেলা কংগ্রেসের সহ সম্পাদক ছত্রপতি রায় এবং শশাঙ্ক শেখর সান্যালকে সঙ্গে নিয়ে সুভাষচন্দ্র বেলডাঙার দিকে যাত্রা করেন। বেলডাঙা পুরাতন বাজারের কাছে হাজরাবাবুদের প্রাঙ্গণে সভামঞ্চ তৈরি করা হয়। বেলডাঙার প্রখ্যাত ঠিকাদার হাজি ইউসুফ ও হাজি আয়ুব মিঞাদের অতিথি হন সে রাতে। ১৯৩৯ সালেও তিনি বেলডাঙায় আসেন। বেলডাঙা বাজারে পুরাতন পুরসভার গলিতে রাধাপদ প্রামাণিকের বাড়িতে রাত্রিবাস করেন।
১৯২৯ সালে নির্বাচনী প্রচারের জন্য কান্দিতে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। সম্ভবত মে মাসে কান্দি হয়ে পাঁচথুপি যান। ১৯৩২ সালে সুভাষচন্দ্র মালদহে যাওয়ার পথে কান্দিতে এসেছিলেন। তিন ঘণ্টা ছিলেন।
 সুভাষচন্দ্র বসু একাধিক কর্মসূচিতে মুর্শিদাবাদে এসেছেন। জেলা জুড়ে নানা ইতিহাসের খোঁজ মেলে। কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্ররা তাঁকে সংবর্ধনা দেন। 
—রাজর্ষি চক্রবর্তী, অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়
 ছাত্রজীবনে সুভাষচন্দ্র মুর্শিদাবাদে এসেছেন। রাজনীতিতে আসার পর জেলবন্দি হয়ে জেলায় আসেন। তার পরেও তিনি এসেছেন। 
—রমাপ্রসাদ ভাস্কর,
ইতিহাসের গবেষক
তথ্য সংগ্রহ: মুর্শিদাবাদে সুভাষচন্দ্র— পুলকেন্দু সিংহ