শালপাতার থালায় দেওয়া মাংসভাত না খেয়ে শতাব্দী শুধু ছবি তুলে উঠে যান বলে অভিযোগ ওঠে। ফাইল চিত্র।
খাবারের সামনে বসে না খেয়ে শুধু ছবি তুলেছেন তিনি। এ নিয়ে বিতর্কের জবাব আগেই দিয়েছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। বুধবার ‘দিদির দূত’ হয়ে শতাব্দী আবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়েছেন। এ বার সাঁইথিয়া বিধানসভার সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের বনশঙ্কা পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন গ্রামে কর্মসূচি শেষে দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করবেন শতাব্দী। তার আগে সে দিনের বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। জানালেন, আগেও দলীয় কর্মীর বাড়িতে খেয়েছেন। মঙ্গলবারও দলের কর্মীরা যেখানে তাঁর খাবারের ব্যবস্থা করেছেন, সেখানেই খাবেন।
তৃণমূলের তারকা সাংসদের কথায়, ‘‘আমি ১৪ বছর ধরে এখানে (বীরভূমে) ঘুরছি। ১৪ বছর ধরে বনবাসে রাম ছিলেন। আমি কি ১৪ বছর ধরে না খেয়ে ঘুরতে পারি? না কি না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারি? সে ক্ষেত্রে আমি তো কর্মীদের বাড়িতেই খাই।’’
এর পর গত ১৩ জানুয়ারি ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি উপলক্ষে বিষ্ণুপুর এলাকার তেঁতুলিয়ায় এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে খাবার না খেয়ে উঠে যাওয়া বিতর্কের বর্ণনা দিতে থাকেন শতাব্দী। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন কী হল, আমি ওখানে গিয়ে খেতে বসলাম। খাবারে ভাত, ডাল, বেগুন ভাজা, মাছ ভাজা ছিল।’’ কিন্তু সেই খাবারের পরিমাণ এতটাই ছিল যে তিনি খেতে পারেননি বলে জানান তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘বেড়াল ডিঙোতে পারে না এমন ভাত দিয়েছিল। আমি ভাত কমাতে বললাম। আমি খেলাম। ওখানে সাংবাদিকরাও খাচ্ছিলেন। আমি যখন হাত ধুয়ে উঠছি, তখন সাংবাদিকেরা বললেন, আমরা আপনার খাওয়ার ছবি পাইনি। আমি ছবি তোলার জন্য বসলাম।’’
শতাব্দীর দাবি, তাঁর ওই ছবিটিই ‘এডিট’ করে অপপ্রচার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিতর্কে সাংসদ বলেন, ‘‘যিনি আমাকে চেনেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারবেন শতাব্দী রায় কেমন। যাঁরা চেনেন না, তাঁরা কী করে বলবেন? কর্মী, ভাই, বন্ধুরা কেউ বলেননি যে, আমি খাইনি। যাঁরা আমার বিশ্লেষণ করছেন তাঁরা আমাকে কতটা জানেন?’’
উল্লেখ্য, এই বিতর্কে খোঁজখবর করে আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছিল, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উঠোনে বসে না খেলেও ওই কর্মীর বাড়ির ভিতরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেছেন সাংসদ। এই বিতর্কে সাংসদের পাশে রয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বিষয়টিকে স্রেফ অপপ্রচার বলে অভিযোগ করেছেন। আর মঙ্গলবার ওই বিতর্কে রায় দিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘ছোটবেলায় মা দুধ খেতে দিত। সেটা ফেলে দিয়ে বলতাম খেয়েছি। সেই প্রমাণ এখন দিতে হবে দেখছি!’’
শতাব্দী এ-ও দাবি করেন, তিনি বোলপুরের সাংসদ হওয়া ইস্তক সাংসদদের সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না গ্রামীণ মানুষের। এখন অবশ্য সবাই জানেন, ‘এমপি মানে কী’।