ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাজস্থানের কোটায় কোচিং সেন্টারগুলিতে প্রতি বছর হাজার হাজার ছেলেমেয়ে ভর্তি হয়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজস্থানের কোটায় আবার অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হল এক পড়ুয়ার। ১৭ বছর বয়সি এক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ভাড়াবাড়ি থেকে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্র। এই নিয়ে ২০২২ সাল থেকে ২২ জনের মৃত্যু হল কোটায়। ২০২১ সাল থেকে কোটায় পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যা ১২১।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম অভদেশ কুমার। তার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের শাহজানপুরে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোটার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিল সে। সোমবার অভদেশের এক বন্ধু তার খোঁজে ভাড়াবাড়িতে গিয়ে দেখে, সিলিং ফ্যান থেকে তার দেহ ঝুলছে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পরে পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে কিশোরের দেহ উদ্ধার করেছে। ছাত্রের পরিচয় জানার পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ।
ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত রাজস্থানের কোটা। প্রতি বছর শহরের কোচিং সেন্টারগুলিতে হাজার হাজার পড়ুয়া ভর্তি হন।
পড়াশোনায় তীব্র প্রতিযোগিতা, পরস্পরকে ছাপিয়ে যাওয়ার দৌড়ে মানসিক চাপ এবং তার প্রভাব— এ সব নিয়ে এই শহরকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ওবেয়সিরিজও। ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ নামে ওই সিরিজ প্রবল জনপ্রিয়। অপর দিকে, এই কোটাতেই গত কয়েক মাসে একের পর এক পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বার বার প্রশ্ন উঠেছে কোচিং সেন্টারগুলিতে শিক্ষাদানের প্রক্রিয়া নিয়ে। এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে রাজস্থানের বিধানসভাতেও। এ নিয়ে একটি বিল আনার কথাও ভাবছে রাজস্থান সরকার। প্রতি বছর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঘটা করে জয়েন্টে সফল পরীক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে ওই বিলে। সরকার মনে করছে, এতে পড়ুয়াদের মনে অযথা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। সেখান থেকে চরম পদক্ষেপ করছে তারা। পাশাপাশি, কোটার কোচিং সেন্টারগুলিতে নিয়মিত যাতায়াত করবেন পর্যবেক্ষকরা। পড়াশোনার পরিবেশ কেমন, ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকের অনুপাত ইত্যাদি বিষয়গুলিও দেখার কথা বলা হয়েছে ওই বিলে।