ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র।
কর্মজীবনের পুরোটা কেটেছে কচিকাঁচাদের সঙ্গে। অবসরগ্রহণের পর তাঁদের উপহার দিয়ে গেলেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নতুন স্কুলবাড়ি তৈরি করে দিলেন পুরুলিয়ার বদলডি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ফটিকচন্দ্র মাহাত। শিক্ষকের দান করা নতুন স্কুলবাড়ির নাম রাখা হয়েছে ‘টুসু ভবন’।
পুরুলিয়ার বরাবাজার ব্লকের বদলডি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ছিলেন ফটিকচন্দ্র। গত বছর জুলাই মাসে শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে যেখানে জীবনের সিংহভাগ সময় কাটিয়ে ফেলেছেন, সেই স্কুল থেকে নিজেকে কী ভাবে দূরে রাখবেন! অবসরের পরও মাঝেমধ্যে স্কুলে যেতেন। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পড়ুয়াদের জন্য একটি নতুন স্কুলবাড়ি তৈরি করে দেবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। গত ৮ অগস্ট প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের হাত দিয়ে উদ্বোধন হল নতুন স্কুলবাড়ির।
ফটিকচন্দ্রের কথায়, ‘‘আমি একটি ১,৬০০ স্কোয়ার ফুটের স্কুলবাড়ি নির্মাণ করেছি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালবেসে সেটিকে ভবনের মর্যাদা দিয়েছে। আর পুরুলিয়ার ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে এর নাম দেওয়া হয়েছে টুসু ভবন।’’ তিনি জানান, অবসরের পর যে টাকা পেয়েছিলেন, সেখান থেকেই এই নির্মাণের জন্য দান করেছেন। প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের এ হেন কাজে স্বাভাবিক ভাবে ভীষণ খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করুণাময় পাত্র বলেন, ‘‘বর্তমানে শিক্ষকতার মান বা পেশা সম্পর্কে জনমানসে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফটিকবাবুর এই কাজ দেখে সাধারণের মানুষের মধ্যে শিক্ষক নিয়ে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, কিছুটা হলেও তার বদল ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।’’
পুরুলিয়ার মানবাজার ব্লক এলাকার জনড়া গ্রামের বাসিন্দা ফটিকচন্দ্র জানান, স্নেহের ছাত্রছাত্রীর জন্য এ টুকু করতে পেরে তিনি ভীষণ খুশি।