ধর্ষণে অভিযুক্ত এক প্রৌঢ়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল থানায় থাকাকালীন। এই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি থানায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অমৃত বাউড়ি (৪৫)। পুলিশের দাবি ‘সেফ কাস্টডি’তে থাকা ওই ব্যক্তি থানার শৌচালয়ে ঢুকে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন থানার ভিতরে তিনি কী ভাবে আত্মহত্যা করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। ওই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি পুলিশও আলাদা করে তদন্ত করবে বলে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার গোবিন্দধাম এলাকার বাসিন্দা অমৃতের বিরুদ্ধে মত্ত অবস্থায় ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় জনরোষের মুখে পড়েন অমৃত। খবর পেয়ে তাঁকে তুলে আনা হয় গঙ্গাজলঘাঁটি থানায়। পুলিশের দাবি, অমৃতকে তখনও গ্রেফতার করা হয়নি, জনরোষ থেকে বাঁচাতে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল ‘সেফ কাস্টডি’তে। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে।
অমৃতের পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত থেকে থানাতেই ছিলেন তিনি। এর পর শুক্রবার বিকেলে থানার শৌচাগারে পাওয়া যায় অমৃতের গলায় ফাঁস লাগানো দেহ। অমৃতের বৌদি পূর্ণিমা বাউড়ি বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকালে অমৃত মারা গেলেও আমাদের খবর দেওয়া হয় শনিবার ভোরে। থানার মধ্যে এক জন যখন আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, পুলিশ তখন কী করছিল? এই মৃত্যুর পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। এই ঘটনার তদন্ত হোক। তা হলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।’’ মৃতের ভাইপো সঞ্জয় বাউড়ি বলেন, “আমার কাকাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তাই তাঁর সব দায়িত্ব পুলিশেরই। আমাদের ধারণা, পুলিশ খুন করেছে আমার কাকাকে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’’
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বিবেক বর্মা এ নিয়ে বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শুক্রবার দুপুরে অমৃত থানার শৌচাগারে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনার পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এই ঘটনাকে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হিসাবে চিহ্নিত করে মানবাধিকার কমিশন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তা আমরা করেছি। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিয়োগ্রাফি করে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, কারও গাফিলাতি ছিল কিনা তা জানতে বিভাগীয় তদন্তও করা হচ্ছে।’’