নিজস্ব চিত্র।
অতিমারি সঙ্কটের মধ্যেই ডায়ারিয়া আতঙ্ক ছড়াল বাঁকুড়ার পাতাকোলা গ্রামে। গত দশ দিনে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ওই গ্রামের প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে কয়েক জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। যার জেরে ন়ড়েচ়ড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিন দশেক আগে হঠাৎ করে ডায়ারিয়ার প্রকোপ শুরু হয় গ্রামে। পেটে ব্যথা, বমি, জলের মতো মলত্যাগের উপসর্গ নিয়ে অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তবে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সম্প্রতি ওই গ্রামে দুই ব্যক্তি মৃত্যু ঘিরে বেশ আতঙ্ক ছড়ায়। গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, তাঁদের মৃত্যু ডায়ারিয়ার কারণেই হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, ‘‘ওই গ্রামে যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, তার সঙ্গে ডায়ারিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই দু’জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে লিভারের অসুখে আর অন্যজনের মৃত্যু হয়েছে মেটাবলিক এনসেফালোপ্যাথি নামের মস্তিষ্কের অসুখে।’’
ডায়ারিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবর পেতেই শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে ওই গ্রামে। গ্রামে অসুস্থদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি গ্রামের পানীয় জলের উৎসগুলি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ওই দল। এ বিষয়ে শ্যামল সোরেন জানান, “পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে । রবিবার নতুন করে এই অসুখে মাত্র দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন । আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। গ্রামের মানুষদের পর্যাপ্ত ওআরএস-সহ অন্যান্য ওষুধ দেওয়া হয়েছে।’’
গ্রামের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা দীপিকা পরামানিক দাস। নীলাদ্রিশেখর বলেন, “খবর পেয়েই এই গ্রামে এসেছি। আগামী কাল বিষয়টি বিধানসভায় তুলে ধরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানাব। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরকে অনুরোধ করব বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার জন্য।’’ দীপিকা বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে। পানীয় জলের নমুনা পরীক্ষা করে তেমন কিছু মেলেনি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গ্রামের ব্যবহার্য পুকুরের জল থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে ডায়ারিয়া। তাই আমরা গ্রামের মানুষকে আপাতত পুকুরের জল ব্যবহার করতে নিষেধ করেছি।’’