অনুব্রতকে দেখে কর্মীদের উচ্ছ্বাস বোলপুরে নিজস্ব চিত্র
মাস দেড়েক পর বোলপুরে নিজের বাড়িতে ফিরলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এত দিন পর ‘কেষ্টদা’ বীরভূমের মাটিতে পা দিতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর পাড়ায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা। বিভিন্ন মামলায় সিবিআই তলব এড়ানো নিয়ে টানাপড়েন এবং অসুস্থতার কারণে বীরভূমের বাড়ি ছেড়ে কলকাতার ফ্ল্যাটে ছিলেন অনুব্রত। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার পরেই শুক্রবার বোলপুরে ফিরে এলেন। এসে কেষ্ট জানালেন, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আশীর্বাদে এখন তিনি সুস্থ।
অনুব্রত ফিরছেন, এই খবর জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই পেয়েছিলেন। সেই মতো আয়োজন সেরে রাখা হয়েছিল। সকাল থেকেই ‘কেষ্টদা’র বাড়ির সামনে উৎসবের পরিবেশ। সাজানো হয়েছিল তাঁর পাড়া। জোড়াফুলের পতাকা লাগানো হয় রাস্তা জুড়ে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে বসেছিল মাইক। মঞ্চও বাঁধা হয়েছিল। এলাকায় ঢুকে ওই মঞ্চে উঠেই হাত নেড়ে দলীর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে কেষ্ট বললেন, ‘‘আপনাদের আশীর্বাদে আমি সুস্থ।’’ স্থানীয় নেতাদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘‘আপনারা সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করুন।’’
দুপুর নাগাদ বর্ধমানের উপর দিয়েই বোলপুরে অনুব্রতের কনভয় বোলপুর পৌঁছেছিল। দলীয় কর্মীদের উচ্ছ্বাসের ছবি দেখা গেল সেখানেও। প্রিয় নেতাকে দেখে হাত নাড়তে দেখা গিয়েছে বর্ধমানের আউশগ্রাম, গুসকরা, গোবিন্দপুর, ভেদিয়ায় জাতীয় সড়কের উপর জড়ো হওয়া কর্মী-সমর্থকদের।
গত কয়েক মাস ধরে সিবিআইয়ের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে অনুব্রতের। কখনও গরুপাচার, কখনও কয়লাপাচার ও কখনও আবার সন্ত্রাস মামলায় তাঁকে জেরার জন্য সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই অবস্থায় অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছ’বার সিবিআইয়ের ডাক ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তা নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনার আবহে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত তারিখের দু’দিন আগে এবং নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা আগে সিবিআই দফতরে পৌঁছে গিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন অনুব্রত। এর পরেই বোলপুরে ফিরলেন তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।
কেষ্টর ফিরে আসায় উচ্ছ্বাস নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন বিরোধীরা। বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘উনি কোনও যুদ্ধ জয় করে ফেরেননি। সিবিআই হাজিরা দিয়ে ফিরে এসেছেন। এমন আয়োজন দেখে সত্যিই অবাক হলাম। মানুষ বুঝছেন, উনি কী! এর উত্তরও মানুষই দেবেন।’’
পাল্টা জবাবে সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষ ওঁকে ভালবাসেন। তাই ওঁকে দেখতে এসেছেন। আমাদের নেতা এসেছেন, তাই আমরাও এসেছি। উনি কত বড় নেতা, মানুষ তা বুঝিয়ে দিলেন।’’