বাড়ছে কালজানি নদীর জলস্তর। — নিজস্ব চিত্র।
প্রবল বৃষ্টিতে এ বার জলমগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। তার জেরে ধূপগুড়ি এবং ফালাকাটার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। যাত্রীদের ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বর্ষণের জেরে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীর জলস্তর বেড়েছে।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটা সড়ক যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে সোনাপুর হয়ে ঘুরপথে যানবাহন চলছে। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন পথচারী থেকে ব্যবসায়ী সকলেই। গদাধর দত্ত নামে ধূপগুড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে হাঁটু অবধি জল জমেছে রাত থেকে। এ জন্য আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। প্রশাসনের তো কোনও হেলদোল নেই দেখছি!’’
জয়গাঁর আগে কালচিনি ব্লকের বিবাড়ি এলাকায় গোবরজদি নদীর উপর অবস্থিত সেতুর একটি অংশ ধসে গিয়েছে। তার জেরে ওই সেতুর উপর দিয়ে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এর ফলে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভুটানগামী সমস্ত মালবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন রুটের বাসও জয়ঁগা বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে পারছে না। সব বাস জিএসটি মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাতভর টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন ধূপগুড়ি পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড এবং গ্রামীণ এলাকা। আলিপুরদুয়ার শহরেরও পাঁচটি ওয়ার্ড এখন প্লাবিত। নিচু এলাকার মানষজনকে সরানো হচ্ছে। জলস্তর বেড়েছে তিস্তা, জলঢাকা, ডায়না, ডুডুয়া, কুমলাই নদীতে। উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে কালজানি নদীতে সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তোর্সা নদীতে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। ভুটানেও চলছে বৃষ্টি। তার জেরে ভুটান পাহাড় থেকে কালজানি এবং তোর্সা নদী দিয়ে প্রবল বেগে নেমে আসছে জলস্রোত। তার জেরেই এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারেও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। এই পরিস্থিতিতে তিস্তা, জলঢাকার জলস্তর আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই সময়ে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর পরিকল্পনা চলছে।
কোচবিহারের তোর্সা, রায়ডাক ওয়ান, কালজানি এবং মানসাই নদীতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন নদীর অসংরক্ষিত এলাকাগুলি জলমগ্ন হতে শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীগুলিতে চলছে নজরদারি। তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাড সেন্টার। কোচবিহারের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফাঁসির ঘাট এলাকাার বাসিন্দাদের ফ্লাড সেন্টারে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।