(বাঁ দিকে) মঙ্গলবার কালিয়াচকের গন্ডগোলের দৃশ্য। (ডান দিকে) গন্ডগোলের দায়ে ধৃত মূল অভিযুক্ত জ়াকির শেখ।
মালদহের কালিয়াচকে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ধৃত জ়াকির শেখকেই ‘মূল চক্রী’ বলে মনে করছে পুলিশ। শনিবার জ়াকিরকে মালদহ আদালতে তোলা হলে তাঁর সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অভিযোগ, কালিয়াচকের নওদা-যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর দারিয়াপুর মোমিন পাড়ায় তৃণমূল কর্মী হাসান ওরফে আতাউর শেখকে খুন এবং শাসকদলের দুই নেতাকে খুনের চেষ্টা করেন ধৃত। অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার নওদা-যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোমিনপাড়ায় খুন হন ৫০ বছরের হাসান। ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয় ওই তৃণমূল কর্মীর। সেখানেই গন্ডগোলে গুরুতর জখম হন নওদা-যদুপুর তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি বকুল শেখ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য এসারুদ্দিন শেখ। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেন, বকুলদের গুলি করা হয়। যদিও পুলিশ ওই দাবি নস্যাৎ করে দেয়। জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানান, গন্ডগোলের সময় গুলি চলেনি। মৃত বা আহতদের শরীরেও বুলেটের ক্ষত নেই। তবে মালদহের ইংরেজবাজারে তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকারের খুনের দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলায় আরও একটি অপরাধমূলক ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুক্রবার মালদহে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি জেলা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পরে গ্রেফতার হন ‘মিল অভিযুক্ত’ জ়াকির।
জ়াকির অবশ্য সহজে পুলিশের হাতে হাসেননি। গত বুধবার জ়াকিরের শাগরেদ আমির হামজাকে পাকড়াও করার পরে নানা জায়গায় ‘গুরু’র খোঁজ চলেছে। একটি আমবাগানে পুলিশ কুকুর নিয়ে অভিযান চালানো হয়। বিফল হতে হয়। এর পর ড্রোন উড়িয়ে শুরু হয় জ়াকিরের খোঁজ। অবশেষে শুক্রবার অভিযুক্তের নাগাল পায় পুলিশ। পুলিশ সুপার যাদব জানান, গত মঙ্গলবার যে জায়গায় গন্ডগোল হয়েছিল, সেখানে জ়াকির ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে তার প্রমাণ মিলেছে। গন্ডগোলের সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে থাকার প্রমাণও মিলেছে। ধৃতকে জেরার জন্য পুলিশি হেফাজতের নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, নওদা-যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নিয়েই ওই খুনোখুনি হয়। করার জন্য এই ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃত জ়াকির নিজে তৃণমূলের কর্মী। জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে তিনি শাসকদলে যোগদান করেন। যদিও শাসকদলের দাবি, জ়াকিরের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক কিংবা যোগ নেই।