ধূপগুড়ির কিকবক্সার সুব্রত কীর্তনীয়া। —নিজস্ব চিত্র।
সংসার চালাতে ফাস্টফুডের দোকান দিয়েছেন। তবে মন পড়ে থাকে কিকবক্সিংয়ে। লকডাউনের সময় সংসারে টানাটানির চললেও ছেদ পড়েনি কিকবক্সিংয়ের অনুশীলনে। অবশেষে তার ‘পুরস্কার’ জুটল ধূপগুড়ির কিকবক্সার সুব্রত কীর্তনীয়ার। চলতি মাসে গোয়ায় রাজ্য স্তরের কিকবক্সিং প্রতিযোগিতায় জলপাইগুড়ির একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে নাম উঠে এসেছে সুব্রতর।
ধূপগুড়ি ব্লকের গাদং-২ অঞ্চলের শালবাড়ির বাসিন্দা সুব্রত জানিয়েছেন, ২৬-২৭ অগস্ট গোয়ায় ওই প্রতিযোগিতায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ৫৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেবেন। সে জন্য সোমবারই গোয়ায় রওনা দেবেন রাজ্যের কিকবক্সাররা। সুব্রত বলেন, ‘‘ওয়াকু ইন্ডিয়া কিকবক্সিং ফেডারেশন এবং জলপাইগুড়ি কিকবক্সিং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গোয়ায় খেলতে যাচ্ছি। ৫২ কেজি বিভাগে আমি অংশ নেব।’’
তবে গোয়া যাওয়ার জন্য কোনও স্পনসর বা সরকারি সাহায্য জোটেনি সুব্রতর। টানাটানির সংসার থেকে খরচ বাঁচিয়ে গোয়া যাওয়ার টাকা জোগাড় করেছেন। যদিও সহযোগিতার হাত বা়ড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। সুব্রত বলেন, ‘‘গোয়া সফরের জন্য ধূপগুড়ি ব্লক কিকবক্সিং অ্যাসোসিয়েশন কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা করেছে। তবে এই খেলায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে আরও সাহায্য দরকার।’’ জলপাইগুড়ি জেলা কিকবক্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি থেকে গোয়ায় একমাত্র সুব্রত কীর্তনীয়া খেলতে যাচ্ছেন। নিজের খরচেই তাঁকে সেখানে যেতে হচ্ছে। আমরা কোনও স্পনসর পাইনি।’’
সুব্রতের পরিবার বলতে স্ত্রী এবং বৃদ্ধা মা। শালবাড়িতে তাঁর ফাস্টফুডের দোকান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে এলাকায় একটি ছোটখাটো কিকবক্সিং অ্যাকাডেমিও গড়ে তুলেছেন তিনি। তাতে জনাকয়েক শিশু ও কিশোরকিশোরীকে কিকবক্সিংয়ের অনুশীলন করান। সুব্রত বলেন, ‘‘লকডাউনের ফলে সংসারে অনটন থাকলেও তার মধ্যেই কিকবক্সিং প্রতিযোগিতায় যাচ্ছি। স্ত্রী-র সহযোগিতা আর ভরসার জোরেই এ খেলায় অনুপ্রেরণা পাই।’’