আহত সুকুমার ভুঁইয়ার পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়ায় দফায় দফায় হামলার অভিযোগ নিয়ে এ বার সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল)-এর দ্বারস্থ হওয়ায় হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর দাবি, তৃণমূলের শাসনে বিরোধীরা সুরক্ষিত নন। যদিও এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা তৃণমূল।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে যাওয়ায় শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক কাউন্সিলরকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে। আহত কাউন্সিলরকে দেখতে গেলে রবিবার শুভেন্দুর কনভয়ে মোটরবাইকে সওয়ার বিজেপি কর্মীদের উপর ফের হামলা চলে বলেও অভিযোগ। এর জেরে পাঁচ জন আহত হন। যার মধ্যে দু’জন গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁদের তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
সোমবার এই আহত কর্মীদের দেখতে গিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে তৃণমূলের শাসনে বিরোধীরা সুরক্ষিত নয়। পাঁশকুড়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেননি, তাঁরাও রাজ্য সরকারি পরিষেবার পাওয়ার দাবিদার। কিন্তু পাঁশকুড়ায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে এলাকার মানুষকে সহযোগিতা করতে যাওয়ায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের উপর যে ভাবে হামলা হল, তা নজিরবিহীন।’’ শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, ‘‘এই ঘটনাটি ভোট-পরবর্তী হিংসা হিসাবে আদালত নিযুক্ত সিট কমিটিতে পুঙ্খানুপুঙ্খ অভিযোগ জানানো হবে।’’
সূত্রের খবর, শনিবার পাঁশকুড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে হাজির হন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়া। তৃণমূলের টিকিটে পুরভোটে জিতলেও সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন সুকুমার। অভিযোগ, সেই আক্রোশেই জেলবন্দি তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের অনুগামীরা সুকুমারের উপর হামলা চালান। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে বলে দাবি।
খবর পেয়ে রবিবার রাত ৮টা নাগাদ সুকুমারকে দেখতে পাঁশকুড়ায় তাঁর বাড়িতে যান শুভেন্দু। সেখান থেকে শুভেন্দুর কনভয় ফিরে আসার সময় বিজেপি কর্মীদের উপর ফের তৃণমূলীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতর জখম দু’জন তমলুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘তৃণমূল কোনও হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কারা দোষী, সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ আবার শুভেন্দুর পাল্টা দাবি, ‘‘কাউন্সিলরের উপর হামলার ঘটনায় তিন দিন পর অভিযোগ নিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ সুয়োমোটো মামলা করতেই পারত, কিন্তু তা করেনি। পুলিশের ভূমিকা ন্যক্কারজনক। এর জন্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ জরুরি।’’ শুভেন্দুর দাবি, ‘‘রাজ্যের গতিবিধি কেন্দ্রের নজরে রয়েছে। আদালতও সিট গঠন করে ভোট-পরবর্তী হিংসার তদন্ত চালাচ্ছে। তাদের কাছে সব জানানো হবে।’’