কৃষ্ণনগরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার প্লাস্টিকের বোতল। — নিজস্ব চিত্র।
কৃষ্ণনগরে যেখান থেকে তরুণীর অর্ধনগ্ন দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়েছিল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দল। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে একটি প্লাস্টিকের তৈরি ঠান্ডা পানীয়ের বোতল। সেই সঙ্গে ফাঁকা কাগজের গ্লাস এবং স্বল্প ব্যবহৃত দেশলাই পাওয়া গিয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। ঘটনাস্থল থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা। সংগ্রহ করা হয়েছে, বোতলে থাকা তরলের নমুনাও। ওই বোতলে কেরোসিন ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে তরুণীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, জীবিত অবস্থাতেই তরুণীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ময়নাতদন্তে সেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে যে প্লাস্টিকের বোতলটি উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে তরল পদার্থের কিছু অবশিষ্টাংশ ছিল। তার নমুনা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। কী ভাবে তরুণীর গায়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল, কেরোসিন ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই ওই বোতলের তরল আসলে কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (সিআইডি) সোমা দাস এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতেই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। শুক্রবার আরও একটি ফরেন্সিক দলের ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দেশলাই বাক্স থেকে কত ক্ষণ আগে শেষ বার আগুন জ্বালানো হয়েছিল, তরুণীর মৃত্যুর সময়ের সঙ্গে সেই সময়ের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে আগুনে পোড়ার কোনও চিহ্ন রয়েছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) বলেন, ‘‘ফরেন্সিক ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সেগুলি পরীক্ষার পরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’’
উল্লেখ্য, বুধবার কৃষ্ণনগর থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। পুলিশের তদন্তে আস্থা নেই বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। তাঁরা সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। এই ঘটনায় তরুণীর প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সিআইডির সাহায্যও নিচ্ছে পুলিশ।