তৈরি হচ্ছে সেই দুর্গাপ্রতিমা। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় তৈরি হয়েছিল ৮৮ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা। এ বার সেই উচ্চতাকেও টেক্কা দিয়ে নতুন নজির গড়ার চেষ্টা নদিয়া জেলার রানাঘাট কামালপুর এলাকার পুজা উদ্যোক্তাদের। ১১১ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে অতীতে সমস্ত রেকর্ডকে ভাঙতে উঠেপড়ে লেগেছেন তাঁরা। যদিও প্রতিমাশিল্পীদের দাবি, দুর্গাপ্রতিমার উচ্চতার লক্ষ্যমাত্রা ১১১ ফুট হলেও নির্মাণ সম্পন্ন হলে তা আরও বেশি হবে।
কামালপুরের ওই পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, দুর্গাপ্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে ১ বৈশাখ। জোরকদমে কাজ চলছে। ১২ জন স্থানীয় শিল্পীর পাশাপাশি, বেশ কয়েক জন শ্রমিক এবং বৃহৎ উচ্চতার মূর্তি তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে— এমন দু’জন শিল্পী মূর্তিটি তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিশ্বের ‘সবচেয়ে উঁচু’ যে দুর্গাপ্রতিমা তৈরির লক্ষ্যে তাঁরা নেমেছেন, তার মূল কাঠামো তৈরিতে ছ’হাজারেরও বেশি বাঁশ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিমা তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে খড়, তুঁষ, পলিমাটি এবং এক বিশেষ ধরনের রাসায়নিক। শেষ স্তরে থাকছে ফাইবারের পরত। কাঠামোটি দাঁড় করানো হবে লোহার একটি স্ট্যান্ডের উপরে। প্রতিমাটি তৈরি করার জন্য আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
২০১৫ সালে দেশপ্রিয় পার্কের ৮৮ ফুটের দুর্গাপ্রতিমার দর্শন অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। এর পর ২০১৭ সালে অসমের গুয়াহাটিতেও ১০০ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি হয়েছিল। তবে উদ্বোধনের আগে তা ভেঙে যায়। এ বার সেই সব উচ্চতাকে টেক্কা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন নদিয়ার ওই পুজো কমিটি। পুজো কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘সমস্ত আশঙ্কার কথা মাথায় রাখা হচ্ছে প্রতিমা তৈরির সময়। শুধু ১১১ ফুটের মূর্তি তৈরিই নয়, প্রতিমা সাধারণ দর্শনার্থীদের কাছে সুষ্ঠু ভাবে উপস্থাপন করাও শিল্পীদের কাছে চ্যালেঞ্জ। পুরো কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রায় এক একর জায়গা প্যান্ডেল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।’’ সমস্ত ঝক্কি সামলে আগামী দিনে সর্বোচ্চ উচ্চতার দুর্গাপ্রতিমার রেকর্ড তৈরি হয় কি না, তার অপেক্ষায় জেলাবাসী।
এ প্রসঙ্গে আয়োজক সংস্থার সদস্য সুজয় সরকার বলেন, ‘‘প্রতিমাটি যতদূর সম্ভব হালকা ওজনের করা হচ্ছে। ভিড়ের কথা মাথায় রেখে প্যান্ডেলে ঢোকা এবং বেরোনোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হবে। সমস্ত রকম আগাম সতর্কতা নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই প্রতিমা। আমাদের দুর্গাপ্রতিমা বিশ্বের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে।’’
প্রতিমাশিল্পী বাপি সরকার বলেন, ‘‘উঁচু প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা, তা মাথায় রেখে আমরা প্রতিমা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছি। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে কাজ চলছে। নিশ্চিত ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব।’’