দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নদিয়ার দুই বন্ধুর। প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং বেড়াতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন নদিয়ার দুই যুবক। মৃতদের নাম রানা চক্রবর্তী (৪২) এবং গণেশ সরকার (৪২)। শিলিগুড়ির কয়েক কিলোমিটার আগে লরির পিছনে গিয়ে তাঁদের গাড়ি ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় দু’জনের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গাড়িতে মোট ৭ জন ছিলেন। গাড়ির অন্য যাত্রীরা আপাতত হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত রানার বাড়ি নদিয়ার ভীমপুর থানার পোড়াগাছা গোবড়াপোতায়। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। গণেশ তাঁর বন্ধু। গণেশের বাড়ি নদিয়ারই বাদকুল্লায়। তিনিও পেশায় ব্যবসায়ী। প্রতি বছরই বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যেতেন রানা ও গণেশ। নতুন বছরে এ বার তাঁরা দার্জিলিং যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন। সেই মতো সাত বন্ধু শুক্রবার সন্ধ্যায় বাদকুল্লা থেকে গাড়িতে রওনা দেন। ভোরের দিকে ফাঁসিদেওয়া এলাকার সৈয়দাবাদ চা-বাগানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটি। দুর্ঘটনায় গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। বাকিদের উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের অনুমান, কুয়াশায় ঢাকা রাস্তায় চালক কোনও ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ওই লরির পিছনে গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারেন। শনিবার সকালে রানার বাড়িতে খবর আসে। ছেলেকে হারিয়ে কাঁদছেন মা। ঘরের এক কোণে অঝোরে কেঁদে চলেছেন তাঁর স্ত্রী। মাঝে মাঝে সংজ্ঞা হারাচ্ছেন দু’জনেই। দাদা আকাশ চক্রবর্তী বলেন, “সাতবন্ধু মিলে ওরা বাদকুল্লা থেকে বেরিয়েছিল। খুব বেড়ানোর নেশা ছিল। গতকাল রাত্রে শেষ কথা হয়। তখন বলেছিল, একটা ভাল সোয়েটার এনে দেবে। ভোররাতে খবর এল সব শেষ!”
অন্য দিকে গণেশের এক আত্মীয় পরিমল সরকার বলেন, “বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছিল। ওদের ১১ জানুয়ারি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দার্জিলিং যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ শেষ কথা হয়। ভোরে খবর পেলাম, গণেশ আর বেঁচে নেই।’’
রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নান বলেন, “ওখানে ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পরে দেহগুলি বাড়িতে নিয়ে আসা হবে। আমরা যত রকম ভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব, করব।’’