রেশন কার্ড ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের জেরে গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে। প্রতীকী ছবি।
কড়াকড়ির জেরে রাজ্যে সক্রিয় রেশন গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে অনেকটাই। সম্প্রতি খাদ্য দফতর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যানে এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরের মধ্যে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৩২ লক্ষ কমেছে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে রাজ্যে মোট রেশন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ কোটি ৪৫ লক্ষ। চলতি বছরের ১৩ অগস্ট তা হয়েছে ন’কোটি ১৩ লক্ষ। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রাহকের সংখ্যাই মূলত কমেছে বলেই সূত্রের খবর। এই শ্রেণির গ্রাহকের সংখ্যা চার কোটিরও বেশি ছিল। তা এখন নেমে এসেছে তিন কোটি ১৬ লক্ষে।
খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, রেশন কার্ড ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের জেরে গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে। বিশেষ অভিযান চালিয়ে মৃত রেশন গ্রাহকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি অস্তিত্বহীন গ্রাহকদের কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। কোনও বৈধ রেশন গ্রাহককে বঞ্চিত করা হচ্ছে না বলে দাবি খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের। এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে খাদ্যে ভর্তুকি খাতে রাজ্য সরকারের প্রচুর টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। তবে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে কার্ড ব্লক করার ব্যবস্থা চলবে। কোনও কার্ড পুরোপুরি বাতিল করা হবে না। গ্রাহকের অস্তিত্ব প্রমাণ হলেই ব্লক খুলে দেওয়া হবে।
তবে বিপুল সংখ্যক কার্ড কমে যাওয়ার পিছনে শুধু অস্তিত্বহীন বা ভুয়ো রেশন গ্রাহকের উপস্থিতি রয়েছে এটা মানতে চায় না রেশন ডিলারদের সংগঠন। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘খাদ্য দফতরের এমন পদক্ষেপের ফলে রেশন ডিলারদের প্রতি দিন গ্রাহকদের ক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছেন। কিন্তু খাদ্য দফতর নিজের মর্জিমাফিক চলছে। তাতে লাভের লাভ তো কিছু হচ্ছে তো না, বরং রেশন পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ছে।’’ এ বিষয়ে তাঁদের সমস্যার কথা খাদ্য দফতরকে জানিয়েছেন রেশন ডিলাররা। তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই দাবি তাঁদের।
পাল্টা খাদ্য দফতরের সাফাই, বেশ কিছু সময় ধরে ব্যবহার না করার পাশাপাশি আধার নম্বর যাচাই প্রক্রিয়া বাকি থাকার জন্য রেশন কার্ডগুলি ব্লক বা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ব্লক হওয়া কার্ডের গ্রাহক নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করলে তাঁর কার্ড চালু করা হচ্ছে। রেশন ডিলারদের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখে এমনটা বলা হলেও, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের অধিকাংশ গ্রাহক কার্ড চালু করতে আসছেন না। রেশন কার্ডের সঙ্গে এখন গ্রাহকের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণ করা হয়েছে। আঙুলের ছাপ দিয়ে গ্রাহকদের অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই (ই-কেওয়াইসি) করতে বলা হয়েছিল। ব্লক হওয়ার পর ই-কেওয়াইসি করলে সেই কার্ড ফের চালু করে দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক অসুবিধা বা বয়সের জন্য কেওয়াইসি না করতে পারলে তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।