পুকুরে পড়ে যাওয়া সেই গাড়ি। — নিজস্ব চিত্র।
বিয়েবাড়ি থেকে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। চার বন্ধু মিলে একটি গাড়িতে দিব্যি হুল্লোড় করতে করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তে বদলে গেল বিষাদে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হুড়মুড়িয়ে রাস্তার পাশের পুকুরে গিয়ে পড়ল চার চাকার গাড়ি। মৃত্যু হল তিন জনের।
ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার শ্রীরামপুর এলাকার। মৃতেরা হলেন বাসুদেব মাজি (৩০), বিদ্যুৎ শাসমল (৪৬) এবং চিত্তরঞ্জন প্রামাণিক (৪৫)। বাসুদেবের বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বৌভাত হয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। তার পর বুধবার দুপুরেও বন্ধুদের মধ্যে খাওয়াদাওয়ার আসর বসে। খাওয়ার পর গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন চার বন্ধু। সেখানেই নেমে আসে বিপদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা দীপেন্দু মাজির বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। দীপেন্দুরই পুত্র বাসুদেব। তিনি তাঁর বন্ধুদের নিয়ে বুধবার দুপুরে গাড়ি করে ঘুরতে বেরোন। চার বন্ধু ছাড়াও গাড়িতে আলাদা চালক ছিলেন। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে গেলে কোনও রকমে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন চালক। বাকিরা বেরোতে পারেননি। স্থানীয়েরা তাঁদের উদ্ধার করতে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গাড়ির কাচ ভেঙে চার জনকে বার করে আনা হয়। প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের চেষ্টায় ওই চার জনকে পুকুর থেকে তোলা সম্ভব হয়েছিল।
প্রাথমিক ভাবে চার জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় ময়না হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের নিয়ে যাওয়া হয় তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আরও এক জনের মৃত্যু হয় সেখানে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক জন এখনও চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল তমলুক থানার পুলিশ। তারা পুকুর থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে বাসুদেব শ্রীরামপুরের বাসিন্দা। এ ছাড়া, বিদ্যুৎ পরমানন্দপুরে এবং চিত্তরঞ্জন উত্তর চংরাচকে থাকতেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁদের বন্ধু ২৮ বছরের শিবু হাজরা।
শ্রীরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েতের সদস্য রাজকুমার মণ্ডল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গাড়িটি শ্রীরামপুর থেকে দোবাদির দিকে যাচ্ছিল। গতি ছিল ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। রাস্তায় অনেক বাঁক থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।’’