অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে চারাগাছ বিলি। —নিজস্ব চিত্র।
বদলে যাওয়া বাংলায় ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে সামাজিক অনুষ্ঠানের চরিত্র। রক্তদান, গাছের চারা বিলির মতো নানা সমাজ কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড মিশে যাচ্ছে বিয়েবাড়ি, অন্নপ্রাশন, জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের দেবব্রত সাহু এবং তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা এমনই এক নজির তৈরি করলেন। তাঁদের শিশুকন্যা দৃষ্ণার অন্নপ্রাশনে আমন্ত্রিতদের হাতে তুলে দিলেন একটি করে চারাগাছ।
সমাজ এবং প্রকৃতির মেলবন্ধনের উদ্দেশ্যেই তাঁদের এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমী দেবব্রত। তিনি বলেন, ‘‘দ়ৃষ্ণার অন্নপ্রাশনে আমন্ত্রিত সাড়ে চারশোর বেশি মানুষে হাতে একটি করে সবেদা গাছের চারা তুলে দিয়েছি আমরা।’’ এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘ফলের গাছের চারা দিলে মানুষ নিজের জমিতে তা লাগাতে বেশি উৎসাহিত হবেন। সে জন্যই আমরা সবেদা চারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’
বৃক্ষরোপণ এবং বনসৃজনে পরিচিতজনদের উৎসাহিত করাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন পেশায় পোস্টাল এজেন্ট দেবব্রত। প্রথমে ফলের গাছের চারার সন্ধানে বন দফতরে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে না মেলায় স্থানীয় নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করেন তিনি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী কৃষ্ণা বলেন, ‘‘আমাদের এই উদ্যোগে যদি পরিবেশ সংরক্ষণের সচেতনতা সামান্য বাড়ে, সেটাই আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি।’’ অন্নপ্রাশনে আমন্ত্রিত সৌরভ দিন্ডা বলেন, ‘‘নেমন্তন্ন খেতে এসে এমন অভিনব উপহারের কথা ভাবতেই পারিনি। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব যখন শুধুমাত্র সরকারের কিছু বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে সাহু দম্পতি যে কাজ করলেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’