ছবি: সংগৃহীত।
জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পাল্টা পুলিশ সূত্রে দাবি, খুন তো দূরের কথা, ওই ব্যক্তিকে মারধরই করা হয়নি। তিনি নিজেই থানায় অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। তাতেই মাথা ফেটে যায় তাঁর, মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়ে আসে। ‘অসুস্থ’ ব্যক্তিকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় করা একটি ফেসবুক লাইভের দৃশ্যে দেখা গিয়েছে ওই ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে থানার একটি ঘরের মেঝেতে । তাঁর দু’চোখ খোলা। দেহ নিথর। আত্মীয় স্বজনদের চিৎকার চেঁচামেচির জবাবে কোনও কথা বলছেন না থানায় উপস্থিত কর্মীরা। পরে অবশ্য তাঁদের দেখা যায় কিছুটা সক্রিয় হয়ে ওই যুবকের দেহটিকে সেখান থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে।
বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়। তার পরেই কলেজ স্ট্রিট চত্বরে শুরু হয় জনবিক্ষোভ। কলেজ স্ট্রিট অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান মৃত ব্যক্তির আত্মীয় স্বজন এবং বাড়ির লোকেরা। পরে সেই বিক্ষোভ কেন্দ্রীভূত হয় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা চত্বরেই। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। থানার ওসিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি তোলেন তিনি। পাশাপাশিই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার তরফে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি না দেওয়া হলেও থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির আত্মীয় স্বজনেরা যে অভিযোগ এনেছেন তা সত্য নয়। বেআইনি ভাবে কেনা একটি চুরির ফোন জমা দেওয়ার জন্য থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল অশোক সাউ নামের এক ব্যক্তিকে। তিনি ফোন জমা দিতে এসে পুলিশের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। তার পর করিডোরে অস্থির ভাবে হাঁটা চলা করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর সেখান থেকে ঘরে ফিরে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। তাঁর মাথা ফেটে যায়। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বার হয়ে আসে। যদিও পুলিশ গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ফোন মাত্র ২০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন অশোক। কলুটোলা লেনে একটি পানের দোকান চালান তিনি। পুলিশি জেরায় স্বীকারও করে নিয়েছিলেন নামমাত্র দামে ওই ফোন কেনার কথা। ফোনটি তাঁকে জমা দিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু অশোক বদলে থানা থেকে এক জনকে ফোন করেন। বুধবার ঠিক পৌনে ৬টা নাগাদ থানায় ঢুকেছিলেন অশোক। ৬টা বেজে ৫ মিনিটে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় ওই ফোনের বিষয়ে। প্রশ্ন শুনে ৬টা ৯ মিনিট নাগাদ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান তিনি। ৬টা বেজে ১১ মিনিটে তাঁকে থানা থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের উদ্দেশে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই গোটা বিষয়টিই সিসিটিভি ফুটেজে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে থানায় সেই সময় যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।