পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় জেলায় সংখ্যালঘু সম্পাদক করল সিপিএম! —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক পদে নতুন মুখকে আনা হল। বদল অনিবার্যই ছিল। রবিবার নবদ্বীপে জেলা সম্মেলন শেষে সম্পাদক হয়েছেন মেঘলাল শেখ। এই প্রথম নদিয়া জেলায় সিপিএমের সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন কোনও সংখ্যালঘু অংশের নেতা।
তিন বছর আগে যখন সিপিএমের জেলা সম্মেলনগুলি হচ্ছিল তখন দেখা গিয়েছিল উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদে সংখ্যালঘু অংশের দুই নেতা আনওয়ারুল হক এবং জামির মোল্লাকে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। নাটকীয় কিছু না ঘটলে এ বারও ওই দুই নেতা সংশ্লিষ্ট দুই জেলায় জেলা সম্পাদক থাকবেন। সেই সঙ্গে যুক্ত হল নদিয়াও। তবে সংখ্যালঘু অংশের নেতৃত্বকে দায়িত্ব দিয়ে সিপিএম যে ভোটবাক্সে বিরাট কিছু করতে পারেনি তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্বে বর্তমানে রয়েছেন মহম্মদ সেলিম। কিন্তু ধারাবাহিক ভোটগুলিতে দেখা যাচ্ছে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিক থেকে সরেনি। ফলে নদিয়ায় এই বদল হলেও ভোটের বাক্সে তার তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই অভিমত সিপিএমের একটা বড় অংশের।
মেঘলাল ছিলেন নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি। তিনি দলের রাজ্য কমিটিরও সদস্য। ৬৮ বছর বয়সি এই নেতা নবদ্বীপ ব্লকের স্বরূপগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। জেলা কমিটির প্রথম বৈঠকে মেঘলালের নাম প্রস্তাব করেন সিপিএম নেত্রী রমা বিশ্বাস। সমর্থন করেন প্রাক্তন সাংসদ অলকেশ দাস। সর্বসম্মতিতেই জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মেঘলাল। তবে এর পরেও একটি ‘যদি’ এবং ‘কিন্তু’ ভাসছে নদিয়া সিপিএমের অন্দরে। সম্মেলন শেষ হওয়ার অব্যবহিত পরেই নদিয়া সিপিএমের একটি অংশ থেকে বলা হচ্ছে, মেঘলাল স্থায়ী জেলা সম্পাদক নন। অন্তর্বর্তী সময়ে তাঁকে বদল করা হতে পারে। এ ব্যাপারে দলের অভ্যন্তরীণ কিছু কারণের উল্লেখ করছেন তাঁরা। যদিও তা কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
নদিয়া সিপিএমের সম্পাদক পদে এতদিন ছিলেন সুমিত দে। তিনি দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সিপিএমের দলীয় সংবিধান অনুযায়ী এক ব্যক্তি তিনটি স্তরে থাকতে পারেন না। ফলে সুমিতকে সরতেই হত। তবে বিকল্প হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছিল সুমিত বিশ্বাস এবং অলকেশ দাসের। সাধারণত এই ধরনের দু’টি নাম নিয়ে মতান্তর তৈরি হলে আলিমুদ্দিনের প্রাচীন প্রথা হল তৃতীয় কাউকে সম্পাদক করে দেওয়া। নবদ্বীপে আলিমুদ্দিনের সেই প্রাচীন ফর্মুলাই বাস্তবায়িত হল।