Mamata Banerjee

সরকারি প্রকল্প মানেই কি ক্ষমতাসীনের ছবি? মোদীর উদাহরণ টেনে প্রশ্ন মমতার!

করোনা পর্বে টিকার শংসাপত্রে নরেন্দ্র মোদীর ছবি ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক বছর পর বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে আবার শোনা গেল সেই বক্তব্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৩
Share:

ছবি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে নাম না করে নিশানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।

সরকার প্রচারবিমুখ হবে, না নিজের কাজের কথা তুলে ধরবে প্রতিটি পদক্ষেপে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদাহরণ টেনে আবার এই প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পর্বে একাধিক বার মমতার মুখে শোনা গিয়েছিল এই বক্তব্য। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার থেকে নাম না করে মোদীর প্রসঙ্গ টেনে মমতা আরও এক বার সেই বিতর্ক তুলে দিলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, এ বার থেকে মৃত্যুর শংসাপত্রেও মোদীর ছবি থাকা উচিত!

Advertisement

করোনার টিকা নেওয়ার শংসাপত্রে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখের ছবি রয়েছে। বছর দেড়েক আগে করোনা পর্বে এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, টিকার শংসাপত্রকে প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করার কৌশল নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই ঘটনা জাতীয় ক্ষেত্রে জন্ম দিয়েছিল নতুন বিতর্কের। গত বছরের ডিসেম্বরে জি২০ সম্মেলনের প্রতীকচিহ্ন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। ওই প্রতীকে ছিল পদ্মফুলের ছবি। যা বিজেপির দলীয় প্রতীকও বটে। মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘প্রতীকে পদ্মফুলই ব্যবহার করা হল কেন? ভারতের সংস্কৃতি বোঝানোর আর কোনও উপায় কি ছিল না?’’

অবশ্য একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, ওই প্রতীক দেখলেও তিনি চুপ করেই থেকেছেন। কারণ, তিনি মনে করেন, এই ধরনের আলোচনা আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের সম্মানহানি করতে পারে। এর পর বৃহস্পতিবার আবার ছবি-বিতর্ক খুঁচিয়ে দিলেন মমতা। এ বারে নাম না করে মোদীকে নিশানা করেছেন তিনি।

Advertisement

আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মমতা বলেছেন, ‘‘সব জায়গায় একটা মুখ। উনি রেশন দিয়েছেন, উনি খেতে দিয়েছেন। মৃত্যু হলেও ওঁর মুখটা থাকা উচিত।’’ এর পরই মমতার সংযোজন, ‘‘উনি মেরে দিয়েছেন। কোভিড দিয়েছেন। নোটবন্দি দিয়েছেন। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছেন। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। কত কী দিয়েছেন!’’ প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দির সিদ্ধান্ত এবং করোনা পর্বে মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে মমতার অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু এই অভিযোগ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে মোদীর ‘ছবি’ ব্যবহারের প্রসঙ্গটি এবং পর্যায়ক্রমে মৃত্যুর শংসাপত্রেও মোদীর ছবি ব্যবহার নিয়ে মমতার বক্তব্যে।য়

তবে রাজ্যের প্রায় সমস্ত সরকারি প্রকল্পের ঘোষণাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ছবিও থাকে। রাজ্যে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসা বর্ষীয়ান রাজনীতিক মমতার মতে, ‘‘আরে, ছবি সব কথা বলে না! ছবি তাঁদেরই টাঙানো যায়, যাঁরা মানুষের মনের কথা বোঝেন, মানুষ যাঁদের শ্রদ্ধা করেন, ভালবাসেন, যত্ন করেন।’’

সরকারি প্রকল্পে শাসকদলের মুখ যিনি, তাঁর ছবি ব্যবহারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। একই সঙ্গে নতুন নয় জনমুখী বিভিন্ন প্রকল্পের নাম নেতানেত্রীদের নামে উৎসর্গ করাও। তবে এই ‘প্রবণতা’ নিয়ে সে ভাবে কেউই প্রশ্ন তোলেন না। বৃহস্পতিবার তাতে নতুন মাত্রা যোগ হল— মৃত্যুর শংসাপত্রেও কি ক্ষমতাসীনের ছবি থাকা উচিত!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement